বুধের মেরু অঞ্চলে বরফাকারে জমাট জলের প্রমাণ খুঁজে পেয়েছে নাসার নভোযান ম্যাসেঞ্জার। গ্রহটির ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগ আগুনের মত উত্তপ্ত হলেও চিরছায়ায় থাকায় মেরু অঞ্চলে ঠাণ্ডা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এর আগের গবেষণাগুলোতেও বুধের মেরু অঞ্চলের কাছে রাডারে বরফের মত বস্তু ধরা পড়েছিলো।
১৯৭০ সালে বুধের সবচেয়ে কাছ থেকে ঘুরে আসা মেরিনার ১০ নভোযানের পর ম্যাসেঞ্জারই হলো নাসার পাঠানো প্রথম নভোযান যা বুধের ভূপৃষ্ঠে অবতরণ করলো। তবে নভোযানটি বুধের মেরু অঞ্চলের ভূপৃষ্ঠে নামলেও এখনো এর মানচিত্র তৈরি করতে পারেনি।
বর্তমানে বিজ্ঞানীরা নতুন করে রাডারে ধরা পড়া গ্রহটির মেরু অঞ্চলের উজ্জ্বল দিকটির দিকে নজর রাখছেন। আরিকাইবো অবজারভেটরিতে ম্যাসেঞ্জারের এমডিআইএস প্রযুক্তির ছবি তোলা যন্ত্র এরই মধ্যে বুধের মেরু অঞ্চলের বেশ কিছু ছবি পাঠিয়েছে।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ল্যাবরেটরির গবেষক ড. চাবোট জানিয়েছেন, এমডিআইএসের পাঠানো ছবিগুলোতে দেখা যায়, বুধের দক্ষিণ মেরুর কাছের রাডারে ধরা পড়া উজ্জ্বল অংশগুলো পুরোপুরিভাবে গ্রহটির ছায়াচ্ছন্ন অংশের মধ্যেই অবস্থিত। এছাড়া গ্রহটির উত্তর মেরুতেও এমন ছায়াচ্ছন্ন অঞ্চল রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অবশ্য নাসার ম্যাসেঞ্জার মিশনের সহ-গবেষক ও ম্যাসাচুসেটস ইনিস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধ্যাপক মারিয়া জুবের বলেছেন, ‘ছবিগুলোই জলের অব্যর্থ প্রমাণ নয়। সেখানে অনেক আগ্নেয়গিরিও আছে। বুধে যদি জমাট বরফ থেকেই থাকে তবে তা বের করতে ভূমির ১০ থেকে ২০ সেন্টিমিটার নিচে যেতে হবে।
এ বিষয়ে ম্যাসেঞ্জারের পাঠানো ছবিগুলো নিয়ে আরো গবেষণা চলেছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে বুধে গবেষণা চালানোর জন্য ম্যাসেঞ্জার নভোযানটি পাঠায় নাসা। গত বছরের মার্চে এটি বুধের কক্ষপথে প্রবেশ করে। মিশন সফল হওয়ায় একে আগামী ২০১৩ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করারও ঘোষণা দিয়েছে তারা।