আদালতের আধুনিকায়ন : জামিনের বিষয়টি জানা যাচ্ছে অনলাইনেই

আদালতের আধুনিকায়ন : জামিনের বিষয়টি জানা যাচ্ছে অনলাইনেই

106বর্তমান সরকারের ডিজিটাল কার্যক্রমের প্রভাব এখন সর্বত্র। দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট ও নিম্ন আদালতেও ডিজিটাল  কার্যক্রম বিরাজ করছে। তারই অংশ হিসেবে এবার উচ্চ আদালতে আসামি বা অভিযুক্তরা জামিন পেলেন কি না, অধঃস্তন আদালত সে সিদ্ধান্ত জানতে পারছেন অনলাইনেই।

সূত্রে জানা যায়, পুরনো ব্যবস্থায় টেলিফোনে জামিনের বিষয় নিশ্চিত হওয়ার পরিবর্তে উচ্চ আদালত থেকে অভিযুক্তরা জামিন পাওয়ার পর কারাগার থেকে মুক্তি দিতে অধঃস্তন আদালত এখন থেকে অনলাইনেই বেইল কনফারমেশন করতে পারছেন।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিষ্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিরুল ইসলাম জানান, উচ্চ আদালতের আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে অনলাইনে জামিন নিশ্চিত করার কাজটি শুরু হয়েছে চলতি মাসের (নভেম্বর) ১ তারিখ থেকে।

সংশ্লিষ্ট আইন ও প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী- নিম্ন আদালতে বিচারাধীন কোনো মামলার আসামি উচ্চ আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করেন। এ বিষয়ে শুনানির শেষে আসামি জামিন পেলে অধঃস্তন যে আদালতে মামলা চলছে সেই আদালতকে সুপ্রিম কোর্ট চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানায়। চিঠি পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট আদালত নিয়ম অনুযায়ী জামিননামা গ্রহণ করে আসামিকে  কারাগার থেকে মুক্তির ব্যবস্থা করেন।

তবে অভিযুক্তকে মুক্তি দেয়ার আগে চিঠিটি আসলেই সুপ্রিম কোর্ট থেকেই পাঠানো কি-না সেটি সংশ্লিষ্ট শাখায় ফোন করে নিশ্চিত হন অধঃস্তন আদালত কর্তৃপক্ষ। ফলে জামিন বিষয়ে নিশ্চিত হতে সারাদেশের আদালত থেকেই সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় টেলিফোনে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু উচ্চ আদালতে লোকবলের স্বল্পতায় কাজটি করতে প্রায় হিমশিম খেতে হচ্ছিলো। গত ঈদের সময় কাজের চাপে জামিন নিশ্চিতকরণ (বেইল কনফারমেশন) শাখার সংশ্লিষ্টদের নাভিশ্বাস হয়ে উঠে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এই সেবাটি আরো সহজ করতে নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।

সূত্র মতে, প্রধান বিচারপতির নির্দেশ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রিসার্স ও রেফারেন্স অফিসার মো. শামীম সুফী এবং আইটি বিভাগের প্রধান সিস্টেম অ্যানালিস্ট কাজী পারভেজ আনোয়ার বিশেষ একটি সফটওয়ার ডিজাইন করেন। যেখানে একজন অপারেটর হাইকোর্ট বিভাগের প্রতিটি জামিনের আদেশ স্ক্যান করে আপলোড করেন। আপলোডকৃত আদেশের বিপরীতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি ওয়েব রেফারেন্স নম্বর তৈরি হয়, যা জামিনের আদেশে রেফারেন্স নম্বরটি সিল মেরে রেখে দেয়া হয় এবং চলে যায় অধঃস্তন আদালতে।

অধঃস্তন আদালত সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তাকে প্রদত্ত ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে অনলাইন থেকে সংশ্লিষ্ট জামিনের আদেশটি খুঁজে বের করতে পারবেন। ওয়েবসাইটে পাওয়া জামিন আদেশের সঙ্গে পাঠানো চিঠির মিল থাকলে আসামিকে মুক্তি দেবেন কারা কর্তৃপক্ষ। ফলে টেলিফোনে আর জামিন আদেশ নিশ্চিত হওয়ার প্রয়োজন হবে না।

বিষয়টি তদারকি করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার হোসনে আরা আক্তারের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া কমিটিতে রয়েছেন হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার এসএম এরশাদুল আলম।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, প্রধান বিচারপতির নির্দেশে আদালতের সব ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহারের চেষ্টা করছি। আর অনলাইন বেইল কনফারমেশন সেই পদক্ষেপেরই অংশ।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর