সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী ইউনিয়নের খুকনী গ্রামের ফেরদৌস (১০) জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। আশপাশের ছেলেমেয়েরা যখন হই-হুল্লোড় করে বিদ্যালয়ে যায়, তখন তাকিয়ে দেখা ছাড়া তার কিছুই করার থাকে না। তাই একটি হুইলচেয়ারের জন্য তার কতই না আকুতি! কিন্তু তাঁতশ্রমিক আক্তার হোসেনের পক্ষে ছেলের জন্য একটি হুইলচেয়ার কেনা সম্ভব নয়।
১৮ নভেম্বর দুপুরে খুকনী গ্রামে ফেরদৌসদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সহায়সম্বল বলতে একটি টিনের ছাপরাঘর। তাতেই পাঁচ সদস্যের পরিবার থাকে।
আক্তার হোসেন বলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলে জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। জন্ম থেকে ফেরদৌসের পা দুটি চিকন। হাঁটুর ওপর ভর করে ও হামাগুড়ি দিয়ে সে আস্তে আস্তে চলে। দারিদ্র্যের কারণে বড় মেয়ে তামান্না খাতুন (১২) এখন আর স্কুলে যায় না। অন্যের বাড়িতে কাজ করে। ছোট মেয়ের বয়স মাত্র দুই বছর। সারা দিনে যতটুকু রোজগার হয় তা দিয়ে স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে কোনোমতে জীবন চলে। ছেলে বহুবার বলেছে, একটি হুইলচেয়ার কিনে দেওয়ার জন্য। কিন্তু নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থায় হুইলচেয়ার কেনা তাঁর কাছে দুঃস্বপ্ন।’
সমস্যার কথা জানতে চাইলে ফেরদৌস বলেন, একটি হুইলচেয়ার থাকলে সে নিজে চলাফেরা করতে পারত। স্কুলে গিয়ে লেখাপড়াও করতে পারত।
আক্তার হোসেন বলেন, প্রতিবন্ধী হিসেবে তাঁর ছেলে সরকারি-বেসরকারি কোনো সাহায্য পায় না। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধী কার্ডও দেওয়া হয়নি।
খুকনী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম বলেন, তাঁর ইউনিয়নে অনেক প্রতিবন্ধী আছে। এদের অনেককে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে বরাদ্দ পেলে ফেরদৌসকে সাহায্য করা হবে।