যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোনো রকম ছাড় দেবে না। বিশ্বও সন্ত্রাসের কাছে হার মানবে না। গতকাল রোববার কুয়ালালামপুরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ান সম্মেলনের পর এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। খবর রয়টার্সের।
এক সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে বারাক ওবামা আইএসবিরোধী লড়াইয়ে সহায়তার জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, জঙ্গিনেতাদের খুঁজে বের করা হবে এবং আইএসের আয়ের উৎস বন্ধ করা হবে। তাঁরা আইএসকে ধ্বংস করবেন। রাশিয়া যদি আইএসকে ধ্বংস করার ওপর গুরুত্ব দেয়, সেটা ‘আশাব্যঞ্জক হবে’। মার্কিন প্রেসিডেন্ট আশা প্রকাশ করেন, সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে সরিয়ে নেতৃত্বের পরিবর্তন আনতে মস্কো রাজি হবে।
এএফপির খবরে ওবামাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পরও সেখানে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ওবামা বলেন, তিনি এতে যোগ দেবেন এবং বিশ্বনেতারাও যেন অবশ্যই প্যারিস সম্মেলনে যোগ দিয়ে প্রমাণ করেন, তাঁরা কট্টরপন্থীদের ভয়ে ভীত নন। গুটিকয়েক খুনি নিজেদের অপকর্মের মাধ্যমে বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ বন্ধ করে দিতে পারবে না। নির্ভীকতাই হবে আইএসের বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র।
জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন গতকাল আসিয়ান সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময় সন্ত্রাস নির্মূল করার কাজে সহায়তার জন্য রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মানবতার নামেই সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা অবলম্বনকারীদের পরাজিত করতে হবে। আইএস নামের অভিন্ন শত্রুকে দমনের জন্য বৈশ্বিক ঐক্য ও সংহতি প্রয়োজন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও সন্ত্রাস দমনে বৈশ্বিক সহযোগিতা চেয়েছেন। মালির একটি হোটেলে জঙ্গি হামলার পর গত শনিবার তিনি এ বক্তব্য দেন।
সম্মেলনে আঞ্চলিক বিষয়: এবারের এশিয়া সফরে ওবামা তুরস্ক, ফিলিপাইন ও মালয়েশিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন। মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার কারণে এশিয়ার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগ নষ্ট হচ্ছে বলে যে অভিযোগ রয়েছে, তা প্রত্যাখ্যান করে ওবামা বলেন, তিনি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি দেশের সংগঠন আসিয়ানের নেতাদের আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্যই এশিয়ার দেশগুলোর প্রতি সুসম্পর্ক বজায় রাখাটা ওয়াশিংটনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আসিয়ানের নেতারা গতকাল একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। এর মধ্য দিয়ে ওই অঞ্চলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ধাঁচে একটি অভিন্ন বাজারব্যবস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হবে।
চীনের অভিযোগ: চীন অভিযোগ করেছে, বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরে টহলের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক উসকানি দিচ্ছে। দেশটি বলেছে, ওই অঞ্চলের বিভিন্ন দ্বীপের সুরক্ষার জন্য কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে সামরিক স্থাপনার কাজ অব্যাহত রাখবে তারা।
খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ দক্ষিণ চীন সাগরের প্রায় পুরোটার মালিকানা দাবি করে চীন। তবে ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান ও ব্রুনেই একই অঞ্চলের বিভিন্ন সমুদ্রসীমা দাবি করে। বিষয়টি নিয়ে চীনের সঙ্গে প্রতিবেশী ওই দেশগুলোর বিরোধ রয়েছে।