ঢাকা: ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদেরের ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন তাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবার।
শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. আলিম চৌধুরী (বামে) এবং কুন্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা নূতন চন্দ্র সিংহ (ডানে)
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মুজাহিদকে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তার বিরুদ্ধে আনা বুদ্ধিজীবী হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণসহ সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়।
একাত্তর সালে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের একজন ডক্টর আলিম চৌধুরীর কন্যা নুজহাত চৌধুরী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিবিসিকে বলেন, তিনি কখনোই ভাবতে পারেননি যে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ কিংবা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীদের মতো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা সম্ভব হবে।
এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মধ্য দিয়ে চল্লিশ বছরের বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বের হওয়া সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেন নুজহাত চৌধুরী।
মানবতা বিরোধী অপরাধে বিএনপি নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ফাঁসির রায় হয় ২০১৩ সালের অক্টোবরে। তার বিরুদ্ধে প্রমাণিত নয়টি অভিযোগের মধ্যে হত্যা ও গণহত্যার চারটি অপরাধে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী প্রধান বিরোধী দল বিএনপির এবং চট্টগ্রামের রাউজানের একজন প্রভাবশালী নেতা। ১৯৭১ সালে চট্টগ্রামে সংঘটিত যেসব হত্যাকাণ্ডের জন্য তার মৃত্যদণ্ড হয় তার মধ্যে নূতন চন্দ্র সিংহের হত্যাকাণ্ড অন্যতম।
নূতন চন্দ্র সিংহের ছেলে প্রফুল্ল চন্দ্র সিংহ মি. চৌধুরীর দণ্ড কার্যকরের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এর মাধ্যমে তার পিতার আত্মা শান্তি পেয়েছে।
ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কিত একজন মানুষের ফাঁসি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মি. চন্দ্র সিংহ।
বাংলাদেশ সময় রোববার রাত ১২ টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ৪৪ বছর পর এই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলো।- বিবিসি