স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন বলেছেন, আইন শৃঙ্খলার উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে।
শুক্রবার বিকেলে উত্তরাস্থ বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা কল্যাণ সমিতি আয়োজিত গুণীজন সংবর্ধনা ও মিলনমেলা- ২০১২’র অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
উত্তরার আজমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ছিল এ আয়োজন।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সব আলোচিত হত্যাকাণ্ড ও অপরাধের বিচার কাজ শুরু হয়েছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়াসহ আলোচিত অপরাধের বিচার কাজ চলছে। আশা করি এ সরকারের আমলে এগুলোর বিচার প্রক্রিয়া শেষ হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছে। কিন্তু একটি মহল সুপরিকল্পিতভাবে এ বিচার বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা করছে। কিন্তু কোনো চেষ্টাই এ বিচারকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। বর্তমান সরকারের মেয়াদকালেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শেষ করা হবে।’
ফরিদপুরবাসীর প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘ফরিদপুরের মানুষের রয়েছে অগাধ দেশেপ্রেম আর অসীম সাহস। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এটি বারবার প্রমাণিত হয়েছে।’
ফরিদপুর জেলা কল্যাণ সমিতির জন্য জমি বরাদ্দের ঘোষণা দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জমি খুঁজে বের করুন। উত্তরায় সরকারি অনেক জমি আছে। সেখান থেকে যেটি আপনারা চান তা বরাদ্দের জন্য যা যা করা দরকার আমি মন্ত্রী হিসেবে তাই করবো।’
এ সময় তিনি আরো বলেন, বিগত নির্বাচনে ঢাকা ১৮ আসনে (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আসন) মহাজোটের প্রার্থীকে বিজয়ী করার পেছনে এ কল্যাণ সমিতির গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা ছিল।
আগামীতেও এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সংগঠনের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার কর্নেল (অব.) শওকত আলী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান, সংসদ সদস্য জিল্লুর হাকিম, সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, সংসদ সদস্য কেরামত আলী প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার কর্নেল (অব.) শওকত আলী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আর স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়া। আসুন সবাই সম্মিলিতভাবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’
বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান সমিতিকে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য জমি বরাদ্দের ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
তরুণ সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক বলেন, ‘আমার বাবা মানুষের উন্নয়নের জন্য রাজনীতি করতেন। তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে কোনো ধরনের ছাড় দিতে রাজি ছিলেন না। আপনারা আমাদের পরামর্শ দিবেন, সাহস যোগাবেন। এ বিচার কেউ বাধাগ্রস্ত করতে আসলে আমরা তরুণ প্রজন্ম সামনের কাতারে থেকে তা প্রতিহত করবো।’
অনুষ্ঠানে আয়োজকদের পক্ষ থেকে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবদুল লতিফ মিয়া, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক সদস্য কেএম মহসিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শওকত, ইস্ট-ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. মোয়াজ্জেম হোসেনসহ সমিতির বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য আমন্ত্রিত অতিথিদের সম্মাননা ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
একই সঙ্গে ২০১১ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী, জুনিয়র সার্টিফিকেট, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ২০ জন ছাত্রছাত্রীকে বৃত্তি প্রদান করা হয়।
পরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে উত্তরা ও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বসবাসকারী বৃহত্তর ফরিদপুরের জনগণ অংশগ্রহণ করেন।