জামায়াতের ৫৬১ প্রতিষ্ঠানে তদন্ত শুরু

জামায়াতের ৫৬১ প্রতিষ্ঠানে তদন্ত শুরু

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও এর অঙ্গ সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির নিয়ন্ত্রিত ৫৬১ 11প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সরকারের কয়েকটি সংস্থা। প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে বিদেশ থেকে আসা মোটা অংকের অর্থ জঙ্গি ও সন্ত্রাসী সংগঠনকে জোগান দেয়া হচ্ছে- এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ তদন্ত শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ১টি চিঠি দেয়া হয়। এর পরপরই কেন্দ্রীয় ব্যাংক জামায়াতের প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশেষ পরিদর্শন শুরু করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
আরও জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই চিঠির সঙ্গে জামায়াত ও ছাত্রশিবির নিয়ন্ত্রিত ৫৬১টি প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা ও পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের নাম-পরিচয় উল্লেখসহ ১টি গোয়েন্দা সংস্থার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনের সফট কপিও ইমেইলে পাঠিয়েছে। ওই চিঠির ১টি অনুলিপি অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এর আগে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির নিয়ন্ত্রিত ৫৬১টি প্রতিষ্ঠানের ওপর নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরও নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেয় সরকার।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভংকর সাহা বলেন, জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য গত ২৯ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিটি পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়-ব্যয়ের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে- সারা দেশে জামায়াত ও শিবির নিয়ন্ত্রিত ৫৬১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান (ব্যাংক, বীমা সমিতি), সেবামূলক (হাসপাতাল, ক্লিনিক), শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কোচিং সেন্টার, পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট) ও সংগঠন রয়েছে। সংগঠনটির নেতাকর্মীরা এসব প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে তাদের দলীয় বিশ্বাস ও কর্মকান্ডের প্রচার চালাচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য বৈদেশিক সাহায্যের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশে আনা হয়েছে। এসব অর্থ সংগঠনের পেছনে ব্যয় করার পাশাপাশি বিভিন্ন জঙ্গি ও সন্ত্রাসী সংগঠনকে আর্থিক সাহায্য দিচ্ছে।
জানা গেছে, দুই বিদেশী হত্যাকা-সহ সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন নাশকতামূলক ঘটনায় সরকার উদ্বিগ্ন। এসব ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনকে আর্থিক মদতদাতাদের চিহ্নিত করতে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়। ওই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা সংস্থার এক পর্যালোচনা প্রতিবেদনে সারা দেশে জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত ৫৬১টি প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা হয়। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ, মনোরোমা, মানারত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রেনেসাঁ, ইসলামী ব্যাংক ক্রাফট অ্যান্ড ফ্যাশন, ইসলামী ব্যাংক ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি, ইসলামী ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইসলামী ব্যাংক ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড ডিজ্যাবল রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার, রেটিনা, ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল, ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ইমেজিং সেন্টার, আদ-দ্বীন হাসপাতাল, কোরাল রিফ, মিশন ডেভেলপারস, কেয়ারি, ইনটিমেট হাউজিং, সোনারগাঁ হাউজিং, কেয়ারি গ্রুপ, কেয়ারি প্লাজা, কেয়ারি ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস, বিডি ফুড, ইয়ুথ গ্রুপ, মিশন গ্রুপ, আল-হামরা শপিং সেন্টার, ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স কো. লি., তাকাফুল ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স, অনাবিল, সৌদিয়া, আবাবিল, ছালছাবিল, ফুয়াদ আল খতিব মেডিকেল ট্রাস্ট, সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠী, সিএনসি, ফুলকুঁড়ি, স্পন্দন, ফোকাস, কংক্রিট, কনসেপ্ট, অ্যাক্সিলেন্ট, ওমেকা, অপটিমাম।

Featured বাংলাদেশ