প্যারিসে নজীরবিহীন হামলার পর ফ্রান্সে বাস করে এমন বাংলাদেশীদের দেশে থাকা আত্মীয়- স্বজনরা শুরুতে বেশ খানিকটা আতঙ্কিত হয়ে পড়লেও এখন অবশ্য তারা অনেকটাই সামলে নিয়েছেন।
তবে প্যারিসে যেহেতু এর আগেও সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে, তাই ভবিষ্যতে তাদের স্বজনদের অবস্থা কী হবে, এ নিয়ে অনেকের মধ্যে উদ্বেগ এখনো রয়ে গেছে।
এদের কেউ কেউ বলছেন, যেহেতু প্যারিসে হামলার জন্যে কিছু মুসলিমকে দায়ী করা হচ্ছে, সে কারণে তারা প্রথমে স্বজনদের জন্যে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন।
ফ্রান্সে বাস করে এমন বাংলাদেশীর সংখ্যা কত, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।
কিন্তু সেদেশে বাস করেন এমন অনেকেরে ধারণা এই সংখ্যা পঞ্চাশ হাজারের মতো হতে পারে।
এদের একজন লক্ষীপুরের রামগঞ্জের কবির হোসেন পাটোয়ারী। প্রায় আট বছরে ধরে আছেন প্যারিসে। স্ত্রী আর বাচ্চাদের নিয়ে গেছেন সাত মাস আগে।
তার ভাই আলমগীর হোসেন বিবিসি বাংলাকে জানান, হঠাৎ করেই গ্রামে থাকা বাবা-মায়ের কাছে ফোন করে মি. পাটোয়ারী জানান, তিনি ঠিক আছেন।
টেনশন বা উদ্বেগে পড়েন অনেকেই, যাদের আত্মীয়-স্বজনরা সন্ত্রাসী হামলার সময়ে প্যারিসে ছিলেন।
বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষ হামলার ঘটনা জানতে পেরেছেন শনিবারে সকালের দিকে। অনেকেই তখন খবর নিতে ফোন করেন প্যারিসে আত্মীয়-স্বজনের কাছে। তাদের একজন ইনতেখাব মাহমুদ, যার বোন প্যারিসের শহরতলীতে থাকেন পরিবার নিয়ে ।
ইনতেখাব মাহমুদ বলছেন, এবারের হামলার সঙ্গে জড়িতদের যেহেতু মুসলিম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, এ কারণে তারা বেশ উদ্বিগ্ন ছিলেন যে এর প্রতিক্রিয়ায় কিছু ঘটে কিনা। তবে এখন আর উদ্বেগ নেই।
ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মুসলিম বাস করেন এই ফান্সে। তাই অনেকে মুসলমানই বেশ আতঙ্কের মধ্যে আছেন বলে তারা জানিয়েছেন।
কাজী মিজানুর রহমানের বোন থাকেন প্যারিসে, মেয়েকে নিয়ে। মিজানুর রহমানের ভাগনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
তিনি বলছেন, ভাগনির মুসলিম পরিচয় কিংবা তার এশীয় চেহারা নিয়ে তিনি খুব বেশী উদ্বিগ্ন নন, কারণ সে পশ্চিমা জীবন যাপন করে। তবে তার উদ্বেগ অন্য জায়গায়, কারণ কখন কোথায় আক্রমণ হয় কিছুই বলা যায় না।
প্যারিসে সবশেষ হামলার আগে সেখানে বসবাসকারীদের সঙ্গে স্বজনদের আগে হয়তো মাঝে মধ্যে কথা হতো।
তবে এই ঘটনার পর তারা এখন প্রায় প্রতিদিনই ফোন করেন, কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত তথ্য বিনিময় করেন তাদের খবরা-খবর নেয়ার জন্যে। -বিবিসি