উপকূলীয় জাহাজ চলাচলের চুক্তির স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অংশ হিসেবে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। গতকাল রবিবার নয়া দিল্লিতে ভারতের সড়ক ও নৌ যোগাযোগমন্ত্রী নীতিন গড়কড়ির উপস্থিতিতে দেশটির জাহাজ চলাচল মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম মহাপরিচালক অমিতাভ কুমার ও বাংলাদেশের নৌ-পরিবহন অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ও জাহাজ নিরীক্ষক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এর ফলে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি পণ্য পরিবহনে খরচ কমবে। এই চুক্তির ফলে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলের বন্দরগুলো থেকে পণ্যবাহী জাহাজ সরাসরি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরসহ অন্যবন্দরগুলোতে পণ্য পরিবহন করতে পারবে। একইভাবে বাংলাদেশের পণ্যবাহী জাহাজও ভারতের বন্দরগুলোতে সরাসরি পণ্য নিয়ে যেতে পারবে। বর্তমানে বাংলাদেশে পণ্য রফতানি করতে ভারতকে কলম্বো ও সিঙ্গাপুর বন্দর ব্যবহার করতে হয়। এই দীর্ঘপথ ব্যবহারে পণ্য পরিবহনে অতিরিক্ত খরচ যোগ হয়।
এ বিষয়ে ভারতের পরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, চুক্তির ফলে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলের ৬টি বন্দর থেকে পণ্যবাহী ছোট জাহাজ সরাসরি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, মংলা বন্দরে পণ্য পরিবহন করতে পারবে। এটি দুই দেশের বাণিজ্য উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবহন খরচও কমাবে। দেশটির পরিবহনমন্ত্রী নিতিন গড়করি বলেন, ফ্লাই অ্যাশ ছাড়াও বাংলাদেশে আরও পণ্য রফতানির ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। আমরা কমলা ও চিনি রফতানি করতে পারি। বাণিজ্য উন্নয়নের ফলে নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, যোগ করেন তিনি।
এদিকে, ১৬ নভেম্বর থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত দুই দেশের নৌসচিব পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক আলোচনার কথা রয়েছে। এতে উপকূল বরাবর শুধু পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল নয়, সার্বিক সম্পর্ক উন্নয়নসহ আরও কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ভারতের যেকোনো বন্দর থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে যাত্রীবাহী ও পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল, ট্রানজিট ফি পেমেন্ট বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্য। ইন্দো-বাংলা রিভার প্রটোকলের মাধ্যমে চলতি অর্থবছর প্রথমবারের মতো আশুগঞ্জ হয়ে ত্রিপুরায় পণ্য পরিবহন করে ভারত।
গত জুনে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে উপকূলীয় জাহাজ চলাচল চুক্তি হয়। সেই চুক্তি কার্যকর করতে নীতিমালা ও অন্যান্য বিষয় চূড়ান্ত করে এই এসওপি স্বাক্ষরিত হল।