যাত্রী নিয়ে বাস ছুটে চলছে গন্তব্যে। নেই কোনো চালক, নেই কোনো সহকারী। যাত্রী ছাউনিতে এসে বাস দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। বাসের দরজা খুলে যাচ্ছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। যাত্রী উঠছে। দরজা বন্ধ হচ্ছে। বলা হচ্ছে মানুষ চালিত বাসের চেয়েও এ বাস বেশি নিরাপদ।
গ্রিসের রাস্তায় চলতে শুরু করেছে এই চালকবিহীন বাস। ১দিন হয়তো ঢাকার রাস্তায় আর চালকের চিন্তায় বাস চলাচল বন্ধ হবে না!
এই বাসটি জনবহুল রাস্তাতেই চলাচল করবে। গতকাল রবিবার পর্যন্ত বাসটিকে পরীক্ষামূলকভাবে গ্রিসের রাস্তায় চালানো হয়েছে। প্রথম প্রথম এই বাসে বিনামূল্যে ভ্রমণ করা যাবে।
গ্রিসের ইনস্টিটিউট অব কমিউনিকেশন অ্যান্ড কম্পিউটার সিস্টেমের গবেষণা পরিচালক অ্যাঞ্জেলো আমদিতিস বলেন, ‘প্রথমবারের মতো কেউ সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় বাস শহরের রাস্তায় নামানোর সাহস করলো।’
এর আগে গ্রিসে গবেষণা এলাকার ভেতরে চালকবিহীন বাসগুলো চালানো হয়েছিল। নিরাপত্তার জন্য গাড়িতে চালকও রাখা হয়েছিল। ট্রিকালার ছয়টি বাসে কোনো মানুষ চালক থাকবে না যা অন্য গাড়ির সাথে রাস্তায় সমানতালে চলবে।
এই বাস চলাচল নিয়ে গ্রিসে নতুন আইনও পাস হয়েছে এটি সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১২ কিলোমিটার গতিবেগে চলতে পারবে। বাসটি চাইলেই লেন পরিবর্তন করতে পারবে না। পথে যদি কোনো বাধা পায়, থেমে যাবে।
আমদিতিস বলেছেন, ‘এই আইন মানতে আমরা বদ্ধ পরিকর।’
এই কার্যক্রমটি পরিচালিত হচ্ছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন উদ্যোগে নেয়া প্রকল্পের ভিত্তিতে। প্রকল্পটির নাম সিটিমোবিল-২। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে মধ্যম ঘরানার শহরগুলোর যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত করা।
জনবহুল শহর যেমন ম্যানহাটন অথবা প্যারিস, বাসগুলো তাদের সেরা কর্মক্ষমতা দেখাতে পারবে বলে আশা করা যায়। আমিদিতিস বলেন, ‘স্মার্ট যানবাহনগুলো ভালোভাবে কাজ করতে পারবে যখন তাদের আশেপাশের গাড়িগুলোকে তারা ভালোমত চিনতে পারবে। সংঘর্ষ, অপর দিক থেকে ছুটে আসা আলো, লেন পরিবর্তন, দাঁড়ানো মানুষ সম্পর্কে যতো ভালো হিসাব গাড়িগুলো করতে পারবে, ততো রাস্তায় নির্বিঘ্নে চলাচলে সক্ষম হবে।’
গবেষকরা বলছেন, এখনও পর্যন্ত রাস্তায় মানুষ নিয়ন্ত্রিত যানবাহনের সংখ্যা বেশি। যতো বেশি স্বয়ংক্রিয় গাড়ি রাস্তায় চলবে, ততো বেশি গাড়িগুলো ভালো কর্মক্ষমতা দেখাতে পারবে। বাসে যাত্রী ওঠার পর প্রয়োজনীয় তথ্য বাসই বলে দেবে। কীভাবে স্বয়ংক্রিয় এই বাস ব্যবহার করতে হয়, সে সম্পর্কেও পুরোপুরি বর্ণনা থাকবে বাসগুলোতে।
২০১৬ সালের মার্চ পর্যন্ত ট্রিকালার তৈরি বাসগুলো পরীক্ষামূলকভাবে রাস্তায় চলবে। এর মধ্যে বাসগুলোর কর্মক্ষমতা, নাগরিকদের প্রতিক্রিয়া ও শহর নিয়ন্ত্রকের প্রতিক্রিয়া জানা যাবে। বর্তমান বাসটির ডিজাইন করেছে রোবোসফট।
বাসটি তৈরিতে কতো ব্যয় হয়েছে তা এখনও পরিষ্কার করেননি বাস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ট্রিকালা।