তুলুস হত্যাকাণ্ডের নায়ককে ঘিরে ফেলেছে ফরাসি পুলিশ। একটি ই-মেইলের সূত্র ধরে অভিযুক্তের অবস্থান সনাক্ত করে বুধবার সকালেই তার অবস্থান তুলুসের একটি বাড়িকে ঘিরে ফেলে ফরাসি পুলিশ।
সোমবার ফ্রান্সের তুলুস শহরের একটি ইহুদি স্কুলে গুলি চালিয়ে চারজনকে হত্যা করা হয়। এর আগে একইভাবে তিন ফরাসি সেনাকে হত্যা করা হয়। উভয় হত্যাকাণ্ডের জন্য একই ব্যক্তি দায়ী বলে ধারণা করে পুলিশ।
সোমবার হত্যাকাণ্ড সংঘটনের পরপরই অপরাধীকে খুঁজে বের করতে ফ্রান্সের সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অভিযানে নামে ফরাসি পুলিশ।
অবশেষে সন্দেহভাজন হত্যাকারী এবং তার অবস্থানকে সনাক্ত করে বুধবার সকালেই পুলিশ তার অবস্থানের চারপাশকে ঘিরে ফেলে।
পুলিশ প্রথমে বাড়িটিতে ঢোকার চেষ্টা করলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে অভিযুক্ত ২৩ বছর বয়সী যুবক মোহাম্মদ মেরাহ। এ সময় দুই অফিসার গুলিবিদ্ধ হলে পুলিশ সে প্রচেষ্টা ত্যাগ করে। পরবর্তীতে তাকে আত্মসমর্পণে রাজি করাতে তার সঙ্গে আলোচনা শুরু করে পুলিশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আত্মসমর্পণে রাজি না হওয়ায় পুলিশি অবরোধ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনে গড়ায়।
এদিকে বুধবার দিনের শেষে অবরোধস্থলে বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া গেছে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম। এর আগে উজ্জ্বল কমলা আলোর ঝলকানি সহ তিনটি বিস্ফোরণের খবর দেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
অভিযুক্ত মোহাম্মদ মেরাহ নামের ২৩ বছর বয়সী ওই যুবকই ইহুদি স্কুল ও গত সপ্তাহের সেনা হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী বলে নিশ্চিত করেছে ফরাসি পুলিশ।
অভিযুক্ত আত্মসমর্পণে রাজি না হওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে শেষ পর্যন্ত বিষয়টির নিষ্পত্তি আনতে ফরাসি পুলিশকে বল প্রয়োগ করতে হবে।
ঘটনাস্থলে বিস্ফোরণের পর স্থানীয় ডেপুটি মেয়র সংবাদমাধ্যমকে জানান ,‘আলোচনার সুযোগ শেষ এবং বল প্রয়োগ শুরু হয়েছে।’
অভিযুক্ত হত্যাকারী তার আস্তানায় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কালাসনিকভ রাইফেল, অত্যাধুনিক নাইন এমএম উজি পিস্তল এবং অনেকগুলো গ্রেনেড নিয়ে ঘাপটি মেরে বসে আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অভিযানের অংশ হিসেবে বুধবার সন্ধ্যা থেকেই অবরোধস্থলের আশপাশের রাস্তার বাতি নিভিয়ে দেয় পুলিশ। এর আগে মেরাহের সহযোগীদের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি চালায় এবং তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আটক করে।
সংবাদমাধ্যম জানায় মেরাহকে আত্মসমর্পণে রাজি করানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে পুলিশ তার মাকে ঘটনাস্থলে হাজির করে। কিন্তু তাদের সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়, সন্তানের ওপর নিজের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই বলেই দাবি করেন মেরাহের মা।