গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমণ বন্ধে পদক্ষেপ না নেওয়া হলে ২১শ’ সাল নাগাদ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মহাসাগরীয় ক্ষতির পরিমাণ বছরে ২ ট্রিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে। আর এই ক্ষতির পরিমাণ বাড়তেই থাকবে।
স্টকহোম এনভায়রনমেন্ট ইন্সটিটিউট (এসইআই)’র নেতৃত্বে সমুদ্র বিশেষজ্ঞদের এক গবেষণায় বুধবার একথা বলা হয়।
এতে বলা হয়, গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমন কমানো না গেলে এ শতাব্দীর শেষ নাগাদ বৈশ্বিক তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। আর এতে মহাসাগরীয় অম্লীকরণ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, সামুদ্রিক দূষণ, সামুদ্রিক প্রাণীর এলাকা পরিবর্তন ও আরো তীব্র আকারে সাইক্লোন হতে পারে।
এমনকি প্রবাল, মৎস্য চাষ ও মাছের মজুদ শেষ হওয়ারও ঝুঁকি দেখা দিতে পারে।
‘মহাসাগরের মূল্যায়ন’ শীর্ষক এ গবেষণায় বিশ্বের সামুদ্রিক পরিবেশ যেসব ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়ছে তা বিশ্লেষণ এবং বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য সৃষ্ট ক্ষতির পরিমাপ করেন গবেষকরা।
গবেষণায় অবশ্য মহাসাগরীয় বিভিন্ন প্রাণীর ক্ষতির আর্থিক দিকটি বের করা হয়নি।
এসইআই জানায়, গ্যাস নির্গমন না কমানো হলে ২১০০ সালের মধ্যে বাৎসরিক ক্ষতির পরিমাণ ১.৯৮ ট্রিলিয়ন ডলার বা দশমিক ৩৭ শতাংশ বাড়বে।
গবেষণায় আরো বলা হয়, নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ সার ও এর উচ্ছিষ্টাংশ মহাসাগরীয় অক্সিজেন এলাকাকে নষ্ট করবে। ৫শ’রও বেশি এলাকায় ইতোমধ্যেই এটা ঘটেছে।
এছাড়া পর্যটন খাতে ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি ঘটবে, বার্ষিক ৬৩৯ বিলিয়ন ডলার। আর মহাসাগরের কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণের ক্ষমতায় ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪৫৮ বিলিয়ন ডলার হবে।
তবে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনের হার আরো দ্রুত কমিয়ে আনা ও তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে ২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা গেলে মোট খরচের প্রায় ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলার এড়ানো সম্ভব হবে বলেও এতে বলা হয়।
অন্যতম গবেষক ও এসইআই’র মার্কিন সেন্টারের ঊর্ধ্বতন অর্থনীতিবিদ ও ক্লাইমেট ইকোনমিকস গ্র“পের পরিচালক ফ্রাঙ্ক অকারম্যান রয়টার্সকে বলেন, এ ধরনের অগ্রগতির জন্য পরিবেশ থেকে কার্বন ডাই অক্সাইডকে শোষণ করতে সক্ষম প্রযুক্তির মতো বিভিন্ন বিষয়ের বিস্মৃত ব্যবহার প্রয়োজন।
তিনি বলেন, “যত দ্রুত আমরা কার্বন নির্গমন বৃদ্ধির হার কমাতে পারব, ক্ষতির পরিমাণও তত দ্রুতই কমবে।”