টি২০তেও জয় বাংলাদেশের

টি২০তেও জয় বাংলাদেশের

ওয়ানডে সিরিজে হুয়াইট ওয়াশের পর এবার ২ ম্যাচ টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত এক জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। ১৩২ রানের টার্গেট অতিক্রম করতে মাঠে নেমে ৬ উইকেট dfgsdgsdgহারিয়ে ১৪ বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেছে টাইগাররা। ফলে ১-০ তে সিরিজেও এগিয়ে গেলো মাশরাফি বাহিনী। এর মধ্যদিয়ে টি২০ ক্রিকেটে নিজেদের ১৩তম জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। আর এই নিয়ে চার বারের মোকাবেলায় তৃতীয়বারের মত জিম্বাবুয়েকে হারালো টাইগাররা। জয়ের জন্য ১৩২ রানের লক্ষ্যে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম ওভারের শেষ বলেই ওপেনার এনামুল হককে হারায় স্বাগতিকরা। অবশ্য তার আউটের পেছনে জিম্বাবুয়ে ফিল্ডারদের অবদানটা কমই ছিলো। তামিমের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউটের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এনামুল। মাত্র ১ রান করেন তিনি।
এনামুলের বিদায়ে তামিমের সঙ্গী হন সাব্বির রহমান। ক্রিজে এসে কিছুটা সময় ব্যয় করলেও দ্রুত রান তোলার দিকেই মনোযোগী ছিলেন সাব্বির। তাল মিলিয়েছেন তামিমও। ফলে ২৬ বলেই এই দু’জনের কাছ থেকে ৩৯ রান পায় বাংলাদেশ। দু’জনের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিলো ম্যাচটা এক পেশে করে ফেলবেন তামিম ও সাব্বির। কিন্তু দলীয় ৪৫ রানে বিদায় নেন সাব্বির। ১৬ বলে ১৮ রান করেন তিনি। এরপর উইকেটে এসেই ফিরে যান মুশফিকুর রহিমও। দলীয় ৫৪ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মুশফিক। করেন মাত্র ২ রান। তাতে কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশকে চিন্তামুক্ত রাখেন তামিম ও নাসির। চতুর্থ উইকেটে স্বাচ্ছন্দ্যে রান জড়ো করছিলেন তারা। এখানে বেশ মারমুখী ছিলেন নাসির। উইকেটে গিয়েই ১টি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি হাকাঁন তিনি। তবে ১৬ রানের বেশি করতে পারেননি নাসির।
নাসিরের বিদায়ের ১ রান পরই ফিরেন তামিম। ব্যক্তিগত ৩১ রানে তামিমের আউটে জয় নিয়ে আবারো চিন্তায় বিভোর হয়ে পড়ে বাংলাদেশ শিবির। তবে সেই চিন্তা দূর করেন মাহমুদুল্লাহ ও লিটন কুমার। ষষ্ঠ উইকেটে ২৬ বলে ৩৮ রানের মূল্যবান জুটি গড়ে দলের জয়ের পথ অনেকটাই সহজ করে ফেলেন মাহমুদুল্লাহ ও লিটন। কিন্তু দলের জয় ১৪ রান দূরে থাকতে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান লিটন। ১২ বলে ১৭ রান করেন তিনি।
এরপর দলের জয়টা অনায়াসেই নিশ্চিত করেন মাহমুদুল্লাহ ও অধিনায়ক মাশরাফি। মাহমুদুল্লাহ ২১ রানে অপরাজিত থাকেন। আর ১২ বলে ১৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন ম্যাশ। জঙ্গবেকে ছক্কা হাকিয়ে জয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি সিরিজে দলকে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন মাশরাফি। ৩১ বলে ৬৮ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা হয়েছেন জিম্বাবুয়ের ওয়ালার। এর আগে টি২০ ফরম্যাটের কথা মাথায় রেখেই টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি। নিজের সিদ্ধান্তটা সঠিক করার দায়িত্বটাও নিজ কাঁেধ তুলে নেন ম্যাশ। বল হাতে নিয়ে ইনিংসের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে সাফল্য পেয়ে যান টাইগার দলপতি। জিম্বাবুয়ের ওপেনার সিকান্দার রাজাকে ৪ রানে থামিয়ে দেন তিনি।
পরের ওভারে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন আরেক পেসার আল-আমিন। সফরকারীদের আরেক ওপেনার রেগিস চাকাবাকে শূন্য হাতে প্যাভিলিয়নে ফেরান তিনি। এই সাফল্যের আবহাওয়াটা অব্যাহত থাকা অবস্থাতেই বাংলাদেশকে আবারো সাফল্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন মাশরাফি। নিজের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলেই জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক এলটন চিগুম্বুরার উইকেট উপড়ে ফেলেন মাশরাফি। আসলে মাশরাফির ঐ ডেলিভারিটি বুঝতেই পারেননি চিগুম্বুরা। তাই তাকেও খালি হাত নিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয়েছে।
১০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে যখন খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে অনেক শংকার মুখে জিম্বাবুয়ে, তখন চতুর্থ উইকেটে জুটি বেঁধে দলকে চাপ মুক্ত করার চেষ্টা করেন সিন উইলিয়ামস ও ক্রেইগ আরভিন। ধীরে ধীরে সফলও হন তারা। ফলে ১০ থেকে দলের স্কোর ৩৮ রানে নিয়ে যান উইলিয়ামস ও আরভিন। এরপরই ঐ জুটি বিছিন্ন করে ফেলেন আত্মবিশ্বাসী স্পিনার নাসির হোসেন।
উইলিয়ামসকে ব্যক্তিগত ১৫ রানে থামিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে জোড়ালোভাবে খেলায় রাখেন নাসির। কিন্তু উইলিয়ামসের জায়গায় ক্রিজে এসেই রুদ্ধ মূর্তি ধারণ করেন ম্যালকম ওয়ালার। উইকেটের চারপাশে চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি ফোটান তিনি। তাতেই দিশেহারা হয়ে পড়ে বাংলাদেশের বোলাররা। এতটাই মারমুখী ছিলেন যে, ২০তম বলেই হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ওয়ালার। এসময় ৩টি চার ও ৫টি ছক্কা মারেন ওয়ালার। ক্যারিয়ারের ১৫তম টি২০ ম্যাচে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পেলেন তিনি।
অন্য প্রান্তে বেশ সর্তক ছিলেন আরভিন। সিঙ্গেলস নিয়ে ওয়ালারকে সহায়তাটা ভালোই করছিলেন তিনি। কিন্তু ব্যক্তিগত ২০ রানে ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলেন তিনি। মাহমুদুল্লাহ’র শিকার হন আরভিন। ফলে ওয়ালারের সাথে ৩৪ বলে গড়ে উঠা ৬৭ রানের জুটি ভেঙ্গে যায়।
আরভিনের বিদায়ের ২ রান পরই আরও দুই উইকেট হারিয়ে আবারো চাপে পড়ে যায় জিম্বাবুয়ে। জঙ্গবে ও মাদজিভাকে বিদায়ের টিকিট ধরিয়ে দেন এ ম্যাচে অভিষেক হওয়া বাংলাদেশের লেগ-স্পিনার জুবায়ের হোসেন। জঙ্গবে শুন্য ও মাদজিবা ১ রান করেন। এরপর দলের স্কোর সামনের দিকে নিয়ে যাবার দায়িত্বটা পুরোপুরিভাবে ছিলো ওয়ালারের উপর।
কারন তখন জিম্বাবুয়ের স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হিসেবে ছিলেন কেবল ওয়ালারই। কিন্তু দলীয় ১২২ রানে ওয়ালারকে ফিরিয়ে দিয়ে জিম্বাবুয়ের শেষ আশাও নিভিয়ে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। তাতে ১৩১ রানেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। তখনো ইনিংসের ৩ বল বাকী ছিলো। ৪টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৩১ বলে ৬৮ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন ওয়ালার। বাংলাদেশের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন মাশরাফি, আল-আমিন, মুস্তাফিজুর ও জুবায়ের। প্রসঙ্গত আগামী ১৫ নভেম্বর সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি২০ ম্যাচে মুখোমুখি বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে।

Featured খেলাধূলা