আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনকভাবে’ মন্থর হয়ে পড়ার কারণে চলতি বছরে বৈশ্বিক জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) গড় প্রবৃদ্ধি কমবে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) গতকাল সোমবার এ পূর্বাভাস দিয়েছে।
ওইসিডির মহাসচিব অ্যাঙ্গেল গরিয়া গতকাল সোমবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অবস্থিত সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে বিশ্ব অর্থনৈতিক পূর্বাভাষ–সংক্রান্ত এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
ওইসিডি বলছে, এ বছরে বৈশ্বিক জিডিপির গড় প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৯ শতাংশ। সংস্থাটি এর আগে গত সেপ্টেম্বরে ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল। ওইসিডি অবশ্য বারবার তার পূর্বাভাসে বৈশ্বিক জিডিপির গড় প্রবৃদ্ধির হার কমিয়ে আসছে। যেমন, গত বছরের নভেম্বরে দেওয়া পূর্বাভাসে ২০১৫ সালের জন্য ৩ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করেছিল।
তবে আগামী ২০১৬ সালে বৈশ্বিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৩ দশমিক ৩ শতাংশে উন্নীত হবে—এমন আশাবাদের পূর্বাভাসও দিয়েছে এ সংস্থা।
সংস্থাটির মতে, এ বছর বিশ্ব বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধির হার কমে ২ শতাংশে নেমে আসতে পারে, যা গত বছর ছিল ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। প্রবৃদ্ধি কমার পূর্বাভাস দিতে গিয়ে ওইসিডি বলেছে, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার সময়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের যে অবস্থা ছিল, এখন আবার তা প্রায় সেই পর্যায়েই চলে গেছে।
ওইসিডির প্রধান অর্থনীতিবিদ ক্যাথরিন মান বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিটা গভীরভাবে উদ্বেগজনক।’ তিনি বলেন, ইউরোপের অর্থনীতিতে যে মন্থরতা দেখা যাচ্ছিল, এখন সেই জায়গায় উন্নয়নশীল বাজারগুলোর দুর্বলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ দুরবস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে পণ্যবাণিজ্যে বিশ্বের বৃহত্তম শক্তি চীন। দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এশিয়ার অন্যান্য দেশের অর্থনীতি ও পণ্য রপ্তানিকারক দেশগুলোর ওপর।
এদিকে চীনসহ অন্যান্য দেশের অর্থনীতিতে পুনরুদ্ধার কর্মসূচির ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওইসিডির দ্বিবার্ষিক-বার্ষিক পূর্বাভাসে। এতে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির হার বেড়ে ২০১৭ সালে ৩ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্যাথরিন মান বলেছেন, ‘ইতিমধ্যে নীতি-পদক্ষেপ বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে। এতে বিদ্যমান দুর্বলতাসমূহ দূর হবে।’ সূত্র: বিবিসি