বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন ঢাকার সিএমএম আদালত।
রোববার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট লুৎফর রহমান শিশির দাখিলকৃত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ওই পরোয়ানা জারি করেছেন।
গত ২০ সেপ্টেম্বর এই বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন ডিবির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সোহেল রানা ওই প্রতিবেদন দাখিল করেন। গত বছর ১৮ অক্টোবর তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নিন্দাবাদ এ মামলাটি দায়ের করেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি হাইকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মশিউর মালেক।
রোববার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আাদালতে সকাল ১০টার দিকে এই মামলাটি দায়ের করেন। বেলা ১১ টার দিকে এই মামলাটির শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করার পর আদালত রাষ্ট্রের অনুমতি সাপেক্ষে সহকারী কমিশনার পদমযাদায় একজন কমকতাকে দিয়ে তদন্ত করে ৩০ অক্টোবর প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে ডিসি ডিবিকে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বিএনপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক রহমান তার লিখিত ‘জিয়াউর রহমান-ফার্স্ট প্রসিডেন্ট অব বাংলাদেশ’ বইয়ে মিথ্যা কাল্পনিক ও ভুল তথ্যাবলি উল্লেখ করেছেন।
তিনি গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বর ইস্ট লন্ডনের বেথনাল গ্রিন এলাকার ইয়র্ক হলে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত “বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বিশ্বনেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রেক্ষিত বাংলাদেশ শীর্ষক” আলোচনা সভায় এক বক্তৃতায় বলেন, “শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু নন পাকবন্ধু, তিনি জাতির জনক হইতে পারে না, তিনি হত্যাকারী। আওয়ামীলীগ কখনোই জনগনের মনের ভাষা বুঝতে পারেনি। তাহারা ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ কিংবা ২৫ মার্চ জনগনের মনের ভাষা বুঝেনি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাংলাদেশের লাখো জনতাকে নিরাপদ মনে করেনি শেখ মুজিব, তিনি নিরাপদ মনে করিয়াছেন হানাদার বাহিনীকে।”
মামলায় আরো অভিযোগ করা হয়েছে, তারেক রহমান তার বক্তব্যে দেশ এবং দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে দেশের স্বাধীনতা, স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস এবং ওই যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে প্রশ্নবিদ্ধ, বিকৃত ও অস্বীকার করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
এ ধরনের সকল কার্যক্রমের মাধ্যমে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামকে অস্বীকার করা হয়েছে, যা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ এবং তারেক রহমান দণ্ডবিধির ১২৩ক ধারায় অপরাধ করেছেন বলে বাদী দাবি করেছেন। বাদী তার অভিযোগের শেষে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতার করে বিচার করার প্রার্থনা জানিয়েছেন।
বাদী তার মামলায় তারেক রহমানকে বাংলাদেশ ও দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী, দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার নীল নকশা প্রনয়নকারী উল্লেখ করেছেন।
এছাড়া বাদী নিজেকে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা দাবি করে বলেন, ২০০২ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে তিনি বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলায় পরিনত করার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাইতেছেন বলে দাবি করেন।
এ বিষয়ে বাদী গত বছর ১৪ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার জন্য একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। ওই নোটিশে বাদী তিন দিনের মধ্যে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা রুজু করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতার করে বিচারের সম্মুখীন করার উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন।