মিয়ানমারের জনগণ দেশটিতে ২৫ বছরের মধ্যে প্রথম সব দলের অংশগ্রহণে সাধারণ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। ভোট শুরু হয়েছে আজ রবিবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টায়। আর এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশটিতে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে চলা সামরিক শাসনের অবসান হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট থিয়েন শিয়েন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং ফলাফল যাই হোক না কেন তাকে সম্মান জানানো হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন। তবে মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করায় মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলে অভিহিত করেছে। মিয়ানমারে এই নির্বিাচনের মধ্য দিয়ে প্রায় ৩ কোটি বার্মিজ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেতে যাচ্ছেন। নব্বইটির বেশি দলের ৬ হাজার প্রার্থী ৬৬৪টি আসনের জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিচ্ছেন।
মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে
সেনা-সমর্থিত ক্ষমতাসীন ইউনিয়ন সলিডারিটি ডেভেলপমেন্ট পার্টিও নির্বাচনের অন্যতম প্রভাবশালী প্রতিদ্বন্দ্বী দল। তবে বিরোধী নেত্রী অং সাং সুচির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে পার্লামেন্টে জয়ী হতে যাচ্ছে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু সরকার গঠন করতে হলে তাদের অবশ্যই দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন পেতে হবে। কিন্তু দেশটির সংবিধান অনুসারে নির্বাচনে সংসদীয় আসনের ২৫ শতাংশ সামরিক বাহিনীর জন্য সংরক্ষিত থাকছে।
এদিকে মাইলফলক হিসেবে আখ্যা পাওয়া এই নির্বাচনকে নির্বাচনকে মৌলিকভাবে ত্রুটিপূর্ণ বলে অভিহিত করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো । সেইসাথে ত্রুটিপূর্ণ ভোটার তালিকা এবং দেশটির লাখ লাখ মুসলিম সম্প্রদায় এবং রোহিঙ্গা নাগরিকদেরকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করায় মানবাধিকার কর্মীদের সমালোচনার মুখে পড়েছে এই নির্বাচন প্রক্রিয়া।
নির্বাচনকে ঘিরে নিরাপত্তা কড়াকড়ি বাড়ানো হয়েছে এবং চল্লিশ হাজার পুলিশ সদস্যকে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে।
সু চি গত বৃহস্পতিবার বলেছেন, এনএলডি সরকার গঠন করলে ক্ষমতার রাশ তার হাতেই থাকবে।
মিয়ানমারে প্রায় ৫০ বছর সামরিক জান্তা ক্ষমতায় ছিল। ২০১১ সালে সেনা-সমর্থিত বেসামরিক সরকার ক্ষমতায় এসে বেশ কিছু সংস্কারকাজ শুরু করে। তবে দেশটির বর্তমান সংবিধান সেনাশাসকদেরই তৈরি। তারা দেশটির পার্লামেন্ট ও সরকারের ওপর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার সব সুযোগ রেখেছেন। আজকের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলেও তা পার্লামেন্টের ৭৫ শতাংশ আসনের প্রতিনিধি চূড়ান্ত করবে। বাকি ২৫ শতাংশ আসন অনির্বাচিত সেনা কর্মকর্তাদের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে। তাই যে দলই ক্ষমতায় আসুক, সেনাবাহিনীর আধিপত্য কমার সুযোগ কম।