বিশ্ব তামাক বিরোধী সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রাধান্য

বিশ্ব তামাক বিরোধী সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রাধান্য

বিশ্বের তামাক বিরোধীকর্মীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে ১৫তম তামাক অথবা বিশ্ব সম্মেলন ২০১২। মঙ্গলবার বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সম্মেলন শুরু হয়। ৫ দিনব্যাপী এ বিশ্ব সম্মেলনের বুধবার ছিল দ্বিতীয় দিন। এ সম্মেলনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়।

এদিনে সানটেক আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার ও প্রদর্শনী কেন্দ্রের বিভিন্ন কক্ষে ৯টি বিভাগে আলাদা ৭৮টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়। এসব প্রবন্ধে বিভিন্ন দেশের তামাক বিরোধী কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা, সফলতা ও প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরা হয়।

বিকল্প তামাকজাত দ্রব্য, চর্বনযোগ্য তামাক, হুক্কা ও অন্যান্য বিভাগে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারতসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ ৯টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করে। তামাকের জন্য ব্যয় বিভাগে নাইজেরিয়া, মালয়, দক্ষিণ আফ্রিকা, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের ৬টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়।

তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা বিভাগে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, অষ্ট্রেলিয়া ইত্যাদি দেশের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়।

মাচ মিডিয়া ক্যাম্পেইন বিভাগে মালয়েশিয়া, তাইওযান, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের ৮টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়। তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা: ছবিসহ সতর্কবাণীর গুরুত্ব বিষয়ক অধিবেশনে উরুগুয়ে, অষ্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ার ৪টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়।

তামাক ব্যবহারের ধারা ও হার অধিবেশনে রাশিয়া, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ৬টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে এ কে এম গোলাম হোসেন ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দেশের তামাক ব্যবহারের হার তুলে ধরেন।

ধূমপান ও ধূমপান ত্যাগের সেবা বিষয়ক বিভাগে চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের ১০টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়। শিশু-কিশোর ও তরুণদের মধ্যে তামাক বিরোধী কার্যক্রম অধিবেশনে দক্ষিণ আফ্রিকা, আর্জেন্টিনা, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের ৯টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়।

তামাক বিরোধী কার্যক্রমে সফলতার গল্প অধিবেশনে হংকং, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়।

এদিকে সিঙ্গাপুর সানটেক আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও প্রদর্শনী কেন্দ্রের কনকোর্স এলাকায় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১ টা এবং বিকেল সোয়া ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত পৃথিবীর প্রায় শতাধিক দেশের প্রায় ৪০০ পোস্টার প্রদর্শিত হয়।

স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও তামাক ব্যবহার বিষয়ক বিভাগে ১২৪টি পোস্টার প্রদর্শিত হয়। তামাকের ব্যয় বিভাগে ১২টি, তামাক কোম্পানির অপকৌশল বিভাগে ১৫টি, তামাক বিষয়ে জনশিক্ষা বিভাগে ৫১টি, তামাক আইন ও নীতিমালা বিভাগে ৯১টি, তামাক বিরোধী কাজে করণীয় বিষয়ক ৪২টি, তামাক নিয়ন্ত্রণে দলগত বিশেষ শ্রেণী/পেশার মানুষের অভিজ্ঞতা শিরোনামে ৪৪টি. তামাক নিয়ন্ত্রণে আগামীতে করণীয় বিভাগে ৮টি পোস্টার প্রদর্শিত হয়।

এছাড়া পোস্টার বিভাগে সেরা নির্বাচিত ১৬টি পোস্টারের ৮টি বুধবার কনকোর্স হলে প্রদর্শিত হয়।

পোস্টার প্রদর্শনীতেও আজ বাংলাদেশের প্রাধান্য ছিল। তামাক নিয়ন্ত্রণে দলগত বিশেষ শ্রেণী/পেশার মানুষের অভিজ্ঞতা বিভাগে বাংলাদেশের এস এম কামাল তার অভিজ্ঞতালব্দ পোস্টার তুলে ধরেন। তামাক বিরোধী কাজে করণীয় বিভাগে আজ বাংলাদেশের প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া, সুরঙ্গনের পরিচালক ও বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের প্রচার বিভাগের কর্মী হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, আইএসিআইবির কর্মকর্তা নিপেন চন্দ্র বালা, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশের মিডিয়া অ্যাডভোকেসি অফিসার সৈয়দ সাইফুল আলম শোভনের পোস্টা প্রদর্শিত হয়। তামাক বিরোধী কাজে জনশিক্ষা বিভাগে অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলমের একটি পোস্টার প্রদর্শিত হয়।

এছাড়া আইন ও নীতিমালা বিভাগে ন্যাশনাল অ্যাডভোকেসি অফিসার সৈয়দা অনন্যা রহমান, নেটওয়ার্ক কর্মকর্তা অদুত রহমান ইমন, র্যাকের নির্বাহী পরিচালক এটিএম শহিদুল ইসলামের পোস্টার প্রদর্শিত হয়।

এসব পোস্টারকে ঘিরে অন্যান্য দেশের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে।

এদিকে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের প্রতিনিধিরা পঞ্চম জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মশালার লোগো সম্বলিত টি-শার্ট পরে বিভিন্ন সেশনে যায়। যা অন্যান্য দেশের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।

বাংলাদেশ