মিয়ানমারবাসীরা ঐতিহাসিক নির্বাচনের অপেক্ষায়। আগামীকাল রবিবার দেশটিতে গত আড়াই দশকের মধ্যে প্রথম বহুদলীয় অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন ঘিরে সব দলের নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়েছে গতকাল শুক্রবার। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর টানা দু’মাস নির্বাচনী প্রচারণা চালায়। এই নির্বাচনে ৯১টি দল অংশগ্রহণ করছে। গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) এই নির্বাচনে বিজয়ী হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে সুচির দলের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ক্ষমতাসীন সেনা সমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি ডেভেলপমেন্ট পার্টির (ইউএসডিপি) সাথে। নির্বাচনে দেশটির ৩০ লাখ মুসলমান ভোট দিতে পারছে না। খবর বিবিসি, এএফপি।
এদিকে নির্বাচনের আগে শেষ সময়ের প্রচারণায় ভোটারদের ঘরে ঘরে গিয়ে সমর্থন চান প্রার্থীরা। নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে গতকাল শুক্রবার ইউনিয়ন সলিডারিটি ডেভেলপমেন্ট পার্টিকে ইয়াঙ্গুনে মিছিল সমাবেশ করতে দেখা গেছে। ২০১১ সাল থেকে দলটি মিয়ানমারে আধাসামরিক সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছে। অং সান সুচি নির্বাচনে ব্যাপক জয় প্রত্যাশা করছেন। নির্বাচনে জয় লাভ করলেও অং সান সুচি নিজে রাষ্ট্রপতি হতে পারবেন না। তবে সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দল জিতলে তিনিই সরকার চালাবেন।
অন্যদিকে বিবিসির ইয়াঙ্গুন সংবাদদাতা জোনাহ ফিশার বলেছেন, নির্বাচন সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য কোনো জরিপ নেই। তবে বিশ্লেষকদের ধারণা নির্বাচনে অংসান সুচির দল ভালো করবে।
মিয়ানমারের দুই কক্ষের পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ এমিওথা হালতাউয়ে (হাউস অব ন্যাশনালিস্ট) আসন রয়েছে ২২৪টি। তারমধ্যে ৫৬টি আসন সংরক্ষিত রয়েছে সামরিক বাহিনীর জন্য। আবার ৪৪০ আসনের নিম্ন কক্ষ পিথু হালতাউয়ে (হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) সামরিক বাহিনীর জন্য সংরক্ষিত ১১০ আসন। ১৯৬২ সালে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর সামরিক একনায়কতন্ত্রের অধীনে ১৯৯০ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল এনএলডি। সামরিক সরকার নির্বাচনী ফল প্রত্যাখ্যান করায় সেসময় ক্ষমতা গ্রহণ তো দূরে থাক, গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তি মেলেনি সুচির। এরপর ২০১০ সালের ৭ নভেম্বর পার্লামেন্ট নির্বাচন হলেও তাতে অংশ নেয়নি এনএলডি। এর ৬ দিনের মাথায় সুচি গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তি পান। এবার প্রথম থেকেই মুক্তভাবে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পেরেছেন গণতন্ত্রের লড়াইয়ের জন্য শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এই নেত্রী।