অবশেষে ভারতে ফিরিয়ে আনা হল ছোটা রাজনকে। আজ শুক্রবার ভারতীয় তদন্তকারীরা এই গ্যাংস্টারকে নিয়ে বিশেষ বিমানে ভারতের উদ্দেশে রওনা হন । আজ ভোর ৫টা নাগাদ দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন তারা। আন্তর্জাতিক স্তরে দু’দশক তল্লাশির পর দিন বারো আগে অস্ট্রেলিয়া থেকে ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার পথে বালিতে গ্রেফতার হন এই মাফিয়া ডন। এর পর থেকেই রাজনকে দেশে ফেরাতে উদ্যোগী হয় কেন্দ্র। পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, বিমানবন্দর থেকেই ছোটা রাজনকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় ঘিরে সিবিআই সদর দফতরে নিয়ে আসা হয়েছে। আপাতত তাদের হেফাজতে রয়েছেন তিনি। সূত্রে খবর, শীঘ্রই তাকে অফিসিয়ালি গ্রেফতার করা হবে। হস্তান্তর সম্পর্কিত জটিলতা আগেই কেটে গিয়েছিল । ইন্দোনেশিয়া সরকারের কাছে এই সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা দিয়েছেন ভারতীয় প্রতিনিধিরা।
ইন্দোনেশিয়ায় বালিতে ধৃত মাফিয়া ডন রাজনকে নিয়ে দু’দিন আগেই দেশে ফেরার কথা ছিল সিবিআই, দিল্লি ও মুম্বই পুলিশের যৌথ দলটির। কিন্তু মঙ্গলবার বালির কাছেই মাউন্ট রিনজানি আগ্নেয়গিরি থেকে শুরু হয় অগ্নুত্পাত। যার জেরে বাতিল করতে হয়েছে বেশ কিছু বিমানের উড়ান। পরিস্থি জটিল হওয়ায় বালির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল বিমানবন্দর খোলার পরে ফের তৎপরতা শুরু হয়। বালির জেল থেকে বেরিয়ে কড়া প্রহরায় গাড়িতে ওঠার আগে রাজন সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশে ফিরছি। আমি খুশি।’
বুলেটপ্রুফ গাড়িতে বিশেষ নিরাপত্তার মধ্যে বালির বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয় রাজনকে। ভারতীয় সময় সন্ধ্যা পৌনে আটটা নাগাদ তাকে নিয়ে দিল্লির দিকে পাড়ি দেয় বিশেষ বিমান।
আজ শুক্রবার রাজনের বিরুদ্ধে সব মামলা তড়িঘড়ি সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে মহারাষ্ট্র । রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, রাজন আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্রের সঙ্গে যুক্ত। এই ধরনের অপরাধের তদন্ত সিবিআই-ই করতে পারে। তাই মামলাগুলি ওই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকারি সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে রাজনের। সেই সমঝোতা মেনেই তার বিরুদ্ধে মামলাগুলি মুম্বই পুলিশের হাত থেকে সরিয়ে নেওয়া হল। কারণ, মুম্বই পুলিশের একাংশ তার শত্রু দাউদ ইব্রাহিমের হয়ে কাজ করছে বলে মনে করেন রাজন।
সরকারি সূত্রে খবর, এ কথা বিশ্বাস করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারাও। তাই রাজনকে আপাতত মুম্বই না পাঠিয়ে দিল্লিতে সিবিআইয়ের সদর দফতর বা দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেলের অফিসে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ায় মোহন কুমার ছদ্মনামে নেওয়া একটি ভারতীয় পাসপোর্ট-সহ ধরা পড়েন রাজন। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ওই পাসপোর্ট বাতিল হয়েছে। রাজন ওই পাসপোর্ট কী ভাবে পেলেন তা তদন্ত করে দেখছে মন্ত্রণালয় ।