ইতিহাস গড়েও বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস করেনি। অপেক্ষায় আছে আরও বড় কিছু অর্জনের। উৎসবের সব প্রস্তুতি নেওয়া। ফাইনালে জিতলেই রঙের হলিতে মেতে উঠবে দেশ। রাজপথ থেকে অলিগলি, প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সাজ সাজ রব একটা অবস্থা। ক্রিকেটাররাও চেষ্টা করছেন জাতিকে মহোৎসবের উপলক্ষ্য এনে দিতে। ফাইনাল জিতলেই এশিয়ার ক্রিকেট সম্রাজ্যের অধিপতি হবে বাংলাদেশ। আর রাজাধিরাজ হবেন একদল ক্রিকেট সৈনিক।
সৌভাগ্যবান ক্রিকেটার বলা হয় নাজমুল হোসেনকে। সহজসরল স্বভাবের এই স্লো মিডিয়াম পেসারের মন বলছে জিতবে, ‘আমার তো মনে হয় জিতে যাবো। আগের দুই ম্যাচের খেলাটা খেলতে পারলেই হবে। আগের ম্যাচের চেয়েও ভালো বল করতে চেষ্টা করবো। মাশরাফি ভাই আছেন। আগে বল করার সুযোগ পেলে আমরা দু’জনে একটা কিছু করার চেষ্টা করবো।’
বাংলাদেশ দলের নিরামিষ ক্রিকেটার বলা হয় নাসির হোসেনকে। ফাইনালের কথা উঠতেই তিনিও গা ঝাড়া দিয়ে উঠলেন, ‘আরে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে তো আমার ভালো লাগে। তাদের বোলারদের পিটিয়ে খুব মজা পাই। ওহাব রিয়াজ, গুল আর চিমা কি করবে। দেখবেন ঠিকই খেলে ফেলবো। আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ভালো খেলেছি বলেই হয়তো তাদের বিপক্ষে ভালো খেলার প্রবল ইচ্ছে কাজ করে আমার ভেতরে।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করেছিলো বাংলাদেশ। ছোটখাটো কয়েকটি ভুলের মাশুল দেয় ম্যাচ হেরে। ওই ম্যাচে নাসিরের উইকেটটি ছিলো প্রতিপক্ষের জন্য সবচেয়ে দামি। ৪৩.৩ ওভারে উমর গুলের বলে ভুল শট খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়েছিলেন। সাজঘরে ফিরেছিলেন ৪৭ রানে। সাকিবকে নিয়ে তিনি শেষ ওভার পর্যন্ত উইকেটে থাকলে জয় দিয়েই এশিয়া কাপ অভিযান শুরু হতো বাংলাদেশের। তা না হলেও পরের দুই ম্যাচে দারুণ ব্যাট করেছেন জাতীয় দলের এই মিডল-অর্ডার। ভারতের বিপক্ষে ৫৪ আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত ৩৬ রান করেন। ফাইনালের ইনিংসেও অপরাজিত থাকার স্বপ্ন দেখেন জাতীয় দলের এই তরুণ অলরাউন্ডার, ‘আগের দুইটা ম্যাচ থেকে আমার ভেতরে একটা বিশ্বাস তৈরি হয়েছে, শেষপর্যন্ত খেলতে পারি। পাকিস্তানের বিপক্ষেও শেষপর্যন্ত খেলতে চাই। আমরা বিশ্বাস ওপরের দিকে রান পেলে আর সাকিব ভাইকে নিয়ে আমি যদি শেষ বল খেলে আসতে পারি তাহলে অন্যরকম ফাইনাল হবে।’
পেস বোলারদের নেতা মাশরাফি বিন মুর্তজা বাস্তববাদী। তার কথা হলো, ‘আমাদের সবাইকে মাটিতে পা রাখতে হবে। দু’টো ম্যাচ জিতেছি বলে ফাইনালও ওই ফ্লোতে জিতে যাবো তেমনটা ভাবার কোন কারণ নেই। জিততে হলে আমাদেরকে সামর্থ্যরে চেয়েও ভালো খেলতে হবে। যতক্ষণ মাঠে থাকবো কেউ যেন একমুহূর্তের জন্যও মনোযোগ না সরায়। আমরা যে পর্যন্ত এসেছি তা অনেক বড় প্রাপ্তি। ফাইনালটা আমাদের জন্য বোনাস। জিততে পারলে খুব ভালো। আর না হলে সবাইকে স্বাভাবিক থাকতে হবে। সাংবাদিক, দর্শকদের অনুরোধ করবো তারা যেন সব ধরণের ফল মেনে নিতে প্রস্তুত থাকেন।’
ফাইনাল নিশ্চিত হওয়ার পরই তা উদযাপন করেছেন ক্রিকেটারা। আরেকটি উৎসব উদযাপনের জন্য মুখিয়ে আছেন বলে জানালেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম, ‘টানা দুই ম্যাচ জেতার পর এটা অবশ্যই উদযাপন করার মতো একটি মুহুর্ত ছিলো। আমরা অবশ্যই সেটা করেছি। এবং সবাই জানে যে, উদযাপনের চাইতে বড় ব্যাপার সামনে আমাদের ফাইনাল খেলা আছে, সেটা বিশাল একটা খেলা এবং সবাই সেটার জন্য প্রস্তুত। আশাকরি জিতে আমরা আবার উৎসব উদযাপন করবো।’