সাম্প্রতিককালে টিএসসিতে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত লেখক অভিজিৎ রায়ের বইয়ের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শুদ্ধস্বরের কর্ণধার আহমেদুর রশীদ টুটুলসহ ৩ জনকে কুপিয়ে ও গুলি করে গুরুতর আহত করার কয়েক ঘণ্টা পরই শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের জাগৃতি প্রকাশনীর কর্ণধার ফয়সল আরেফিন দীপনকেও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এ প্রসঙ্গে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। দীপনের মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের এডিসি মো. জসিম বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নিজের অফিস থেকে দীপনের লাশ বের করা হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরাও দীপন মৃত বলে জানান।
আমাদের ঢাকা মেডিকেল প্রতিনিধি বলেন, সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটের দিকে দীপনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে তাকে নেয়া অপারেশন থিয়েটারে। সেখানেই তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন চিকিৎসক। জানা যায়, লিটলম্যাগের কাজ করতে করতে একটা সময় বইয়ের প্রতি ভালবাসা ও মমতাবোধের তৈরি হয় দীপনের। সেখান থেকেই প্রকাশন সংস্থার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন। বিষয়ভিত্তিক, সৃজনশীল, মননশীল বই বেশি প্রকাশ করা হতো তার প্রকাশনা থেকে।
জাগৃতি প্রকাশনীর কর্ণধার ফয়সল আরেফিন দীপনের বাবা বিশিষ্ট কলামিস্ট আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, আমার ধারণা শুদ্ধস্বরের স্বত্ত্বাধিকারী আহমেদুর রশীদ টুটুলকে হামলাকারীরাই আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, আমি আইনানুযায়ী হয়তোবা মামলা করবো। তবে বিচার নিয়ে আশা করি না। কেননা আমি জানি এসবের বিচার হবে না। এর হত্যার পেছনে জঙ্গিগোষ্ঠী বা অন্য কারো সম্পৃক্ততা আছে মনে করছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এর পিছনে কাদের এখন সম্পৃক্ততা আছে তা বলতে পারছি না। তবে এইটুকু বলবো আমার ছেলে প্রকৃতিপন্থি ছিল, ধর্মবিরোধী ছিল না।
জানা যায়, নিহত ফয়সাল আরেফিন দীপন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক ও লেখক আবুল কাসেম ফজলুল হকের একমাত্র ছেলে। দুই ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়। তার মালিকানাধীন জাগৃতি প্রকাশনী অভিজিতের ‘বিশ্বাসের ভাইরাস’ নামের জনপ্রিয় বইটি প্রকাশ করেছিল। এর আগে ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্ট হত্যায় যে উপায় অবলম্বন করা হয়েছিল শনিবারের দুটি হামলার ধরনও একই বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী। আর লেখক ও অনলাইন কর্মীরা ঘটনার জন্য জঙ্গিদের দায়ী করছে।