আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মো. নাসিম বলেছেন, টিআইবি যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটি অমার্যনীয়। এজন্য জনগণের কাছে তাদের ক্ষমা চাইতে হবে। না হলে জনমত গড়ে তুলে ১৪ দলের পক্ষ থেকে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। দেশের বর্তমান উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে এ বৈঠকের আয়োজন করেছিল ১৪ দল।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সাহায্যপুষ্ট টিআইবি যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। তাদের ভাষা অমার্যনীয়। কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষেও এমন ভাষা প্রয়োগ করা সম্ভব নয়। বর্তমান সংসদে সবাই জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি। সংসদীয় কমিটিগুলো তাদের দায়িত্ব পালন করছে। সংসদীয় কমিটির কাছে মন্ত্রী, এমপি ও কর্মকর্তারা জবাবদিহি করছেন। সংসদে প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি প্রশ্নের জবাব দেন। আমাদেরও জবাবদিহিতা করতে হয়। তা মিডিয়ার মাধ্যমে সারা দেশের মানুষ জানেন। আলোচনার মাধ্যমে সংসদের বাজট পাস হয়েছে। বিরোধী দলীয় নেত্রীর প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী। তবুও এ সংসদে কোনো গালাগালি হয় না।
‘পার্লামেন্ট ওয়াচ’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে গত রবিবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জাতীয় সংসদকে পুতুল নাচের নাট্যশালার সঙ্গে তুলনা করে। এর প্রতিক্রিয়ায় পরদিন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের রাজপথ ও সংসদকে অকার্যকর করার জন্য টিআইবি আন্তর্জাতিক চক্রান্ত করছে। টিআইবির ওই মন্তব্যে বাংলাদেশের সংবিধান ও সংসদকে অবজ্ঞা করো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তবে টিআইবির ওই প্রতিবেদন সমর্থন করে বিএনপি বলছে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল বিতর্কিত; নির্বাচনের পরপরই আন্তর্জাতিক মিত্ররাও এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছিলেন। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ দায়িত্ব নিয়েই সে কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
আজ নাসিম আরো বলেন, জাপান, ভারত ও কোরিয়ার সংসদে যা ঘটে তা এখানে ঘটে না। তাহলে টিআইবি কীভাবে বললো যে সংসদ ‘নাট্যশালা’? এটা গভীর ষড়যন্ত্র। এই ভাষা অমার্যনীয়। স্বপ্ন পূরণ হয়নি বলেই টিআইবির এত ক্ষোভ। তাই জনগণের কাছে টিআইবির ক্ষামা চাইতে হবে। না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
টিআইবি ভোটারদের অপমানিত করেছে দাবি করে নাসিম বলেন, এরা (টিআইবি) কারা? পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের কাছে আহ্বান জানাই টিআইবির খোঁজ-খবর নিয়ে দেখুন কারা এদের অর্থায়ন করে। এরা অসাংবিধানিক সরকার চায়। এদের মুখোশ উন্মোচিত করতে হবে।
নাসিম বলেন, বিদেশি দুই নাগরিক হত্যা, তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিতে হামলা, পুলিশ হত্যার ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা। খালেদা জিয়াও বিদেশে গেলেন, আর একের পর এক ঘটনা ঘটছে। এখন তিনি বিদেশি নাগরিক হত্যা করে চক্রান্ত করতে চান কি না সে প্রশ্নও সামনে আসছে। দেশবাসী আশা করে এসব ঘটনার নেপথ্যে থাকা গডফাদার, গডমাদার ও ব্রাদারের নাম বেড়িয়ে আসুক।
সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাক, দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, জাসদ সাধারণ সম্পাদক শরীফ নূরুল আম্বিয়া, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, বাসদ আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান, জেপি সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য কামরুল হাসান প্রমুখ।