ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির কেরালা ভবনের ক্যানটিনের খাবারের তালিকায় ফিরে এল বিতর্কিত ‘বিফ ফ্রাই’। শুধু তা-ই নয়, এক ঘণ্টার মধ্যেই তা শেষ হয়ে গেল। যদিও এ ‘বিফ’ আসলে গরু নয়, মহিষ।
দিল্লি পুলিশ গত সোমবার কেরালা ভবনে হানা দিয়েছিল গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে কি না যাচাই করতে। পুলিশের সেই আচরণ ব্যাপক রাজনৈতিক ও সামাজিক বিতর্কের জন্ম দেয়। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে বলে পুলিশকে যিনি অভিযোগ করেছিলেন, সেই হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সেনার প্রধান বিষ্ণু গুপ্তকে পুলিশ গতকাল বুধবার আটক করে। কেন তিনি ভুল খবর দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করেছেন তা নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
দিল্লিতে গো-মাংস বিক্রি হয় না। ‘বিফ’ বলে যা বিক্রি হয় তা আসলে মহিষের মাংস। কেরালা ভবনেও বহু বছর ধরে মহিষের মাংস ভাজাকেই ‘বিফ ফ্রাই’ বলা হতো। সোমবারের ঘটনার পর গতকাল মেনুতে অবশ্য ইংরেজিতে ‘বাফেলো মিট’ লেখা হয়েছে।
কেরালা ভবনে দিল্লি পুলিশ ঢুকেছিল ওই রাজ্য সরকারের কর্তাদের সঙ্গে কথা না বলেই। এই কাজকে দিল্লির পুলিশ কমিশনার আইনসিদ্ধ বলে দাবি করলেও কেরালার কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী ওমেন চণ্ডী প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন। গতকাল তিনি বলেন, ‘পুলিশের যুক্তি নিতান্তই অসার। পুলিশের উচিত ছিল রাজ্য সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং পুলিশ কমিশনারকে তলব করে ঘটনার প্রতিবেদন চান। কমিশনার বি এস বাসসি গতকাল প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তাতে বলেছেন, যা করেছেন আইন মেনেই করেছেন।
কমিশনার অপসারণের দাবিতে গতকালও সরব ছিল দিল্লিতে ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টি। দলটির নেতাদের দাবি, দিল্লি পুলিশ বিজেপি-সেনার ভূমিকা পালন করছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হিন্দু সেনার প্রধানকে গ্রেপ্তার করে তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ফৌজদারি আইনে মামলা দায়ের করা হতে পারে। যদিও কেরালার মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, অপরাধী পুলিশের বিরুদ্ধে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এদিকে গতকাল দিল্লিতে শুরু হওয়া সিপিএমের পলিট ব্যুরোর বৈঠকে গরু-বিতর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দলের সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, বিজেপি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর সারা দেশের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। গো-হত্যা, গো-মাংস বা মানুষের খাদ্যাভ্যাসের ওপর অযথা বিধিনিষেধ আরোপ করে শাসক দল সাম্প্রদায়িকতায় উসকানি দিচ্ছে।