পনেরো বছর পর পাকিস্তান থেকে ভারতে ফিরলেন গীতা। ২৩ বছর বয়সী মূক-বধির মেয়েটি আজ সোমবার ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেছেন। এ সময় তার পরনে ছিল লাল-সাদা সালোয়ার কামিজ। ওড়নাটাকে মাথার উপর সুন্দর করে ঘোমটার মতো করে জড়ানো ছিল। গোটা মুখেই ছিল প্রশান্তি মাখা হাসি।
প্রায় ১৫ বছর আগে দিল্লী থেকে লাহোরগামী সমঝোতা এক্সপ্রেসে চেপে পাকিস্তান পৌঁছেছিলেন গীতা। তখন তার বয়স ছিল ৭-৮ বছর। ট্রেন থেকে বাকি যাত্রীরা নেমে গেলেও একা বসেছিল মেয়েটি। পাক-রেঞ্জার্সরা তাকে ট্রেনের কামরায় খুঁজে পেয়েছিল। তাকে যাই জিজ্ঞেস করা হয়, কোনও জবাব না দিয়ে শুধুই ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। পরে বোঝা যায়, মেয়েটি কথা বলতে পারে না। এমনকী, রেঞ্জার্সরা যা বলছিলেন, সে কথাও শুনতে পাচ্ছিল না সে। ছোট্ট মেয়েটি কী ভাবে যে সীমান্ত পেরিয়ে ট্রেনে চেপে লাহোর পৌঁছে গিয়েছিল তা কেউ জানে না।
করাচির একটি পারিবারিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাকে দত্তক নেয়। তারা মেয়েটির নতুন নাম দেয় গীতা। এর মধ্যেই দু’দেশে মু্ক্িত পায় ‘বজরঙ্গি ভাইজান’। আলোচনায় চলে আসে গীতার কাহিনি। শুরু হয় গীতাকে দেশে ফেরত আনার পাক-ভারত উদ্যোগ। ইতোমধ্যে সংবাদ মাধ্যমে গীতার ছবি দেখে নিজের বড় মেয়ে হিরাকে শনাক্ত করেন বিহারের রোশনাই জনার্দন মাহাতোর। এরপর তিনি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মেয়েকে ফিরে পাওয়ার আর্জি জানান।
জনার্দন এখন দিল্লীতে। ‘মেয়ে’কে ঘরে নিয়ে যেতে এসেছেন। তবে বিমানবন্দরে মেয়ের ধারে কাছে যাওয়ার সুযোগ পাননি। দুই সরকারের নির্দেশ মেনে তাকে ডিএনএ পরীক্ষা করাতে হবে। তিনি বলছেন, ‘ডিএনএ কেন, যে কোনও পরীক্ষাতেই আমি পাশ করব। কেননা, ও আমারই মেয়ে।’ দীপাবলির আগে মেয়েকে ফিরে পাওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে আবেগে ভাসছেন জনার্দন। তবে ডিএনএ পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত তাকে অপেক্ষা করতে হবে।