সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি তিন দেশের

ইউরোপের উত্তরাঞ্চলের দেশগুলো শরণার্থী নেওয়া বন্ধ করলে বুলগেরিয়া, রোমানিয়া ও সার্বিয়া তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দেবে বলে হুমকি দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা গতকাল রোববার বলকান অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে ব্রাসেলসে জরুরি বৈঠক করেন। খবর এএফপির।
বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী বয়কো বরিসভ গত শনিবার বলেছেন, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া ও সার্বিয়া লাখো নতুন শরণার্থীর নিরাপদ অঞ্চল বা ‘বাফার জোন’ হওয়ার জন্য তৈরি নয়। ইউরোপের সব দেশকে সম্মিলিতভাবে শরণার্থী সংকটের সমাধান করতে হবে। জার্মানি ও অস্ট্রিয়া যদি সীমান্ত বন্ধ করে দেয়, জবাবে বলকান দেশগুলোও শরণার্থীদের প্রবেশপথ বন্ধ করে দেবে। রাজধানী সোফিয়ায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এ কথা বলেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, শরণার্থী সংকট নিরসনে দ্রুত কোনো সমাধান না হলে স্লোভেনিয়া নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে। আর ক্রোয়েশিয়া শরণার্থী ঠেকাতে নিজের সীমান্তে বেড়া দেওয়ার বিষয়টিও নাকচ করেনি।
এই পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জ্যঁ-ক্লদ জাঙ্কারের আহ্বানে ব্রাসেলসের বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে বুলগেরিয়া, রোমানিয়া ও সার্বিয়ার নেতারা সোফিয়ায় নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন। আর গতকাল ব্রাসেলসের বৈঠকে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল এবং আলবেনিয়া, সার্বিয়া ও মেসিডোনিয়ার নেতারা যোগ দেন।
শরণার্থীদের নিয়ে ইউরোপে এখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সবচেয়ে বড় সংকট চলছে। চলতি বছর এ পর্যন্ত প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজার শরণার্থী ও অভিবাসী মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও এশিয়ার কয়েকটি দেশ থেকে ইউরোপে প্রবেশ করেছে। তারা মূলত উত্তর ও পশ্চিম ইউরোপের সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশগুলোতে আশ্রয় চায়।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, গ্রিস উপকূলে গত সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে অন্তত নয় হাজার করে শরণার্থী পৌঁছায়। তাদের বেশির ভাগই সিরিয়া, ইরাক ও আফগানিস্তানের যুদ্ধ থেকে পালিয়ে ইউরোপমুখী হয়েছে। আশ্রয়ের জন্য জার্মানিতে পৌঁছানোই তাদের লক্ষ্য।
বিবিসির খবরে বলা হয়, স্লোভেনিয়ায় গত শনিবার পর্যন্ত এক সপ্তাহে ৫৮ হাজার শরণার্থী প্রবেশ করে। ঠান্ডা আবহাওয়ায় আরও অনেকে ওই সীমান্তে অপেক্ষা করছে।
লিবিয়ার রেড ক্রিসেন্ট জানায়, দেশটির উপকূলে ৪০ জন শরণার্থীর লাশ ভেসে উঠেছে। আরও প্রায় ৩০ জনের খোঁজে সাগরে তল্লাশি চলছে। ঝুঁকিপূর্ণ নৌকায় চড়ে তারা ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিল।
এ ছাড়া গ্রিসের লেসবস দ্বীপের কাছে নৌকা ডুবে গতকাল দুই শিশু ও এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। দেশটির কোস্টগার্ড জানায়, নৌকাটিতে প্রায় ৬০ জন আরোহী ছিল। তাদের অধিকাংশই আফগান শরণার্থী। নিখোঁজ প্রায় ১২ জনকে উদ্ধার করার জন্য তল্লাশি চলছে। নৌকাটি তুরস্ক থেকে গ্রিসের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল।
এদিকে স্লোভেনিয়ার পুলিশ দেশটির একটি শরণার্থীশিবিরে দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই থামানোর জন্য কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।
অস্ট্রিয়া জানায়, দেশটির একটি নিবন্ধন কেন্দ্রে শনিবার প্রায় ছয় হাজার মানুষ পৌঁছায়। তারা স্লোভেনিয়া থেকে অস্ট্রিয়ায় প্রবেশ করেছে।

Featured আন্তর্জাতিক