কেনেডি খুন হওয়ার খবর আগেই জানতেন কাস্ত্রো!

কেনেডি খুন হওয়ার খবর আগেই জানতেন কাস্ত্রো!

‘প্রেসিডেন্ট চান, সিআইএর ওপর আড়ি পাতা বন্ধ করে এখন টেক্সাসের খবরে কান লাগাও। বড়-ছোট যে কোনো রকম খবর। হঠাৎ উপরওয়ালার এ হেন নির্দেশে আশ্চর্যই হয়েছিলেন কিউবা গুপ্তচর সংস্থার অফিসার ফ্লোরেন্তিনো অ্যাস্পিলাগা লম্বার্ড।

দিনটা ছিল ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর। আগের বছরই কিউবায় রুশ সহযোগিতায় ক্ষেপণাস্ত্র কেন্দ্র তৈরি করা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ও রুশ প্রেসিডেন্ট নিকিতা ক্রুশ্চেভের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছিল। যে দ্বৈরথ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কিউবা আক্রমণ একেবারে শেষ মুহূর্তে ঠেকানো গিয়েছিল।

তা-ও খবর ছিল, যে কোনো সময়ে মার্কিন সেনা আক্রমণ করতে পারে কিউবা। টানটান উত্তেজনার মধ্যে হাভানার পশ্চিম উপকূলে তার ছোট্ট ঘরে হাই ফ্রিকোয়েন্সি রেডিও ট্রান্সমিটারের রিসিভারটা কানে লাগিয়ে রোজই ফ্লোরেন্তিনোকে আড়ি পাততে হতো মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএর গোপন তথ্য চালাচালিতে। যাতে অরল্যান্ডো, ফ্লোরিডা, মিয়ামি অঞ্চলে মার্কিন সেনার অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। হঠাৎ ট্রান্সমিটারে ‘রুটিনে’র বাইরে যাওয়ার নির্দেশ পেয়ে বিস্ময় চেপে টেক্সাসের খবরে কান পাতার ঘণ্টা তিনেক পরে এসেছিল সেই ‘খবর’। যা শুনে নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না ফ্লোরেন্তিনো। ডালাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কেনেডিকে গুলি করে হত্যা করেছে আততায়ী লি হার্ভি অসওয়াল্ড। যে নাকি এক সময় মার্কিন সেনা ছিল। অবশ্য বিস্ময়ের আরও বাকি ছিল। খবর উপরমহলে পৌঁছে দেওয়ার পরে এসেছিল সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া ‘আমাদের প্রেসিডেন্ট জানতেন’।

আর এই ‘জানা’ নিয়েই ফের জেগে উঠেছে অর্ধ শতাব্দী পুরনো বিতর্কটা। সত্যিই কি কাস্ত্রো জানতেন কেনেডি-হত্যার ষড়যন্ত্রের কথা? সরকারিভাবে কাস্ত্রোর বিরুদ্ধে এই ধরনের কোনো অভিযোগের সারবত্তা প্রমাণ করতে পারেনি কেউই। কিন্তু ফ্লোরেন্তিনোসহ কিউবার একাধিক প্রাক্তন গোয়েন্দা ও বেশকিছু প্রাক্তন শীর্ষ সিআইএ অফিসারের বয়ানের ভিত্তিতে প্রাক্তন সিআইএ কর্তা ব্রায়ান ল্যাটেলের বই ‘কাস্ত্রো’স সিক্রেটসে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। ১৯৮৭ সালে কিউবা ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসার পর ফ্লোরেন্তিনো নাকি এমনটাই জানিয়েছিলেন ল্যাটেলকে। এ-ও নাকি জানিয়েছিলেন, কাস্ত্রোপন্থী অসওয়াল্ড মার্কিন প্রেসিডেন্টকে খুন করার মতলব করছেন জেনেও তাকে আটক করেননি কিউবা প্রেসিডেন্ট।

ফ্লোরেন্তিনোর পাশাপাশি কিউবার আরও তিন প্রাক্তন গোয়েন্দার কথাও তার বইয়ে জানিয়েছেন ল্যাটেল।
যার দুজন, জ্যাক চাইল্ডস ও রদ্রিগেজ ল্যাদেরা কেনেডি-হত্যার পরে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে এসে সিআইএকে জানিয়েছিলেন, কাস্ত্রো নাকি নিজে তাদের বলেছিলেন যে অসওয়াল্ডের পরিকল্পনার কথা জানতেন তিনি। তার বক্তব্যের সমর্থনে পেন্টাগন, সিআইএর প্রকাশ করা বেশ কিছু নথিও বইয়ে জানিয়েছেন ল্যাটেল। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

আন্তর্জাতিক