মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আজ বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের সাথে একান্তে হোয়াইট হাউসে বৈঠক করবেন। তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক, পরমাণু নিরাপত্তা ও অন্যান্য ইস্যু নিয়ে এই আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বৈঠকে দুই নেতার বৈঠকে নিরাপত্তাজনিত বিষয়গুলো বেশী প্রাধান্য পেতে পারে। আর এ জন্য ৪দিনের সফরে নওয়াজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন। আফগান তালেবানের সঙ্গে ইসলামাবাদের সম্পর্ক, ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি এমন সন্ত্রাসী গ্রুপকে সমর্থন জানানো এবং দেশটির ক্রমবর্ধমান পরমাণু অস্ত্রভান্ডারকে ওয়াশিংটন নিরাপত্তার প্রতি হুমকি হিসেবেই দেখছে। ইসলামাবাদের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক মসৃণ নয়। দুদেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন নির্ভরশীলতা রয়েছে তেমনি রয়েছে অবিশ্বাস ও তিক্ততা। কিন্তু নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ারে ৯/১১ এর সন্ত্রাসী হামলার হোতা ওসামা বিন লাদেনকে পাকিস্তানের একটি প্রধান নগরীতে বাস করার বিষয়টি উদঘাটিত হওয়ার পর দেশ দুটির সম্পকের ক্ষেত্রে গভীর টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়।
নওয়াজ শরীফ পুনরায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো পোক্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পাকিস্তানের শক্তিশালী নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মনোভাবে খুব একটা পরিবর্তন না আসায় এই প্রয়াস ফলপ্রসু হয় নি। উড্রো ইউলসন সেন্টারের মাইকেল গুজেলম্যান বলেন, শেষ কথা হলো দেশ দুটির মধ্যে প্রচুর মতানৈক্য রয়েছে। দীর্ঘদিন পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীকে অস্ত্র ও অর্থ জোগান দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু তারা যখন দেখলো জঙ্গিদমন প্রত্যাশা করা হলেও পাকিস্তান সেটা করছে না, তখন স্বভাবতই ধৈর্যচ্যুত হয়। হোয়াইট হাউস দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তানের কট্টোর প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের দিকে ক্রমাগতভাবে ঝোঁকে। তা সত্ত্বেও পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েই যায়।
ওবামার ইতোপূর্বকার প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার করা হচ্ছে না, সম্প্রতি এ কথা জানানো হয়েছে। তাদের সৈন্যরা নির্দিষ্ট সময়ের চেয়েও বেশী সময় আফগানিস্তানে থাকবে। হোয়াইট হাউস এব্যাপারে তালেবানদেরও আলোচনার টেবিলে চায়। চলতি মাসে তালেবান জঙ্গিরা আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় একটি প্রধান নগরী কিছু সময়ের জন্য দখল করে নেয়। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, অল্প যে কয়টি সূত্রের জঙ্গিদের ওপর প্রভাব রয়েছে তার মধ্যে পাকিস্তান অন্যতম। পাকিস্তানের সঙ্গে তালেবানের নতুন নেতা আখতার মানসুরের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। আফগানিস্তান তালিবান অন্তর্ঘাতিদের মদদ ও সহযোগিতা করার ব্যাপারে ইসলামাবাদকে অভিযুক্ত করে থাকে।