যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থা সিআইএ প্রধান জন ব্রেনানের ব্যক্তিগত বেশ কিছু ইমেইল ফাঁস করেছে উইকিলিকস। আজ বৃহস্পতিবার বিবিসির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে গতকাল বুধবার উইকিলিকসের ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেয়া হয়। ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে জন ব্রেনানের ব্যক্তিগত ইমেইলগুলো তাদের হাতে চলে এসেছে। এক টিনেজ হ্যাকার যুক্তরাষ্ট্রের স্পাইমাস্টার বলে পরিচিত এওএল এর একাউন্টের গোপনীয় কোড ভেঙে তাতে প্রবেশ করে এবং সেখান থেকে অসংখ্য ইমেইল ও ব্যক্তিগত তথ্য সে সরিয়ে নিয়েছে বলে দাবি করেছে। এ ঘোষণা দেয়ার অল্প সময় পরেই উইকিলিকস জন ব্রেনানের মেইল ফাঁস করার হুমকি দিয়েছে। এর পরই এফবিআই ও সিক্রেট সার্ভিস অনুসন্ধান শুরু করেছে যে, উইকিলিকসের ওই দাবি কতটা সত্য তা নির্ধারণে। যদি জন ব্রেনানের ব্যক্তিগত ইমেইল উইকিলিকসের হাতে চলে যায় তা হবে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অপমানজনক অধ্যায়।
উইকিলিকস তার টুইটার একাউন্টে বলেছে, ‘ঘোষণা: আমরা সিআইএ প্রধান জন ব্রেনানের ইমেইল একাউন্ট পেয়েছি এবং শিগগিরই তা প্রকাশ করে দেব’। এর পর টুইটারে যে একাউন্ট থেকে এই ঘোষণা দেয়া হয়েছে তা যাচাই করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে এই একাউন্ট উইকিলিকসেরই এবং এটা নিয়ন্ত্রণ করেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। গ্রিনিচ মান সময় গতকাল বুধবার বিকাল ৪টায় এ ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবে কবে কখন ইমেইলগুলো অনলাইনে প্রকাশ করা হবে তা স্পষ্ট নয়।
এর আগে এ সপ্তাহে নিউ ইয়র্ক পোস্ট এক প্রতিবেদনে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাই স্কুল পড়ুয়া কিশোর এই হ্যকিংয়ের কাজটি করেছে। কিভাবে, কতগুলো ইমেইল পেয়েছে এসব বর্ণনা করার জন্য সে সাংবাদিকদের ডেকেছিল। এ সময় সে বলেছে, জন ব্রেনানের ইমেইল একাউন্টে স্পর্শকাতর অনেক ফাইল আছে। এর মধ্যে নিরাপত্তা ক্লিয়ারেন্সের জন্য ৪৭ পৃষ্ঠার একটি আবেদন আছে। ওদিকে এই কিশোরের টুইটার একাউন্টে বলা হয়েছে তার বয়স মাত্র ১৩ বছর। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ পদস্থ অনেক কর্মকর্তার গুরুত্বপূর্ণ গোপনীয় নথি প্রকাশ করেছে উইকিলিকস। এর মধ্যে রয়েছে সাড়া জাগানো কূটনৈতিক তারবার্তা। ফলে স্পর্শকাতর ও ক্লাসিফায়েড নথিগুলো যথাযথভাবে রক্ষা করতে না পারার জন্য সিনিয়র কর্মকর্তাদের শুনতে হচ্ছে কঠোর সমালোচনা। এর আগে সিআইএর সাবেক প্রধান ডেভিড পেত্রাউস গোয়েন্দা কিছু নথি হাতবদল করার কারণে দোষ স্বীকার করতে বাধ্য হন এবং শেষ পর্যন্ত পদ ছেড়ে দেন। বলা হয়, ওই গোপন নথিগুলো তিনি আফগানিস্তান যুদ্ধের সময় তার এক রক্ষিতাকে ধার দিয়েছিলেন। ওদিকে ইমেইল ইস্যুতে চাপের মুখে রয়েছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমক্রেট দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন।