বাগেরহাটের রামপালে গত সোমবার রাতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এদিকে, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় এক নারী ও বরগুনার সদর উপজেলায় এক যুবক খুন হয়েছেন।
রামপালে নিহত আবদুল মাজেদ সরদার (৬৫) রাজনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আইন-বিষয়ক সম্পাদক। বাকি দুজন হলেন আশাশুনি উপজেলার মনোয়ারা খাতুন (৩০) ও বরগুনার রাজু (২০)।
নিজস্ব প্রতিবেদক ও জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
বাগেরহাট : রামপালের রাজনগর ইউনিয়নের কালিকা প্রসাদ গ্রামের ডোবার গেট এলাকায় রাস্তার পাশে কুপিয়ে ও গলা কেটে মাজেদ সরদারকে হত্যা করা হয়। নিহত মাজেদের ছেলে মো. ইব্রাহিম সরদার বলেন, তাঁর বাবা সোমবার এশার নামাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। কালিকা প্রসাদ ডোবার গেটের কাছে এলে দুর্বৃত্তরা তাঁর বাবাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, মংলা-ঘষিয়াখালী অংশের সংযোগ খাল খনন ও এসব খালের অবৈধ বাঁধ অপসারণে প্রশাসনকে সহায়তা করায় অবৈধ খাল দখলকারীরা তাঁকে হত্যা করিয়েছে।
রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম গতকাল বিকেলে বলেন, এই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন যুবককে আটক করা হয়েছে। তাঁরা হলেন রবি ইজারদার, ইলিয়াস শেখ ও আলম লস্কর।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর
করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা : নিহত মনোয়ারা উপজেলার গাজীপুর গুচ্ছগ্রামের আবদুল খালেক সরদারের মেয়ে। আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক বলেন, স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে রাত ১১টার দিকে গুচ্ছগ্রামের নিজ বাড়ি থেকে মনোয়ারার লাশ উদ্ধার করা হয়। মনোয়ারার দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
নিহতের বাবা বলেন, দুই বছর আগে মনোয়ারার স্বামী আবুল কালাম মারা যাওয়ার পর থেকেই গুচ্ছগ্রামের একটি ছাপরাঘরে তিনি একাই থাকতেন।
ওসি আজমল হুদা বলেন, এ ব্যাপারে মনোয়ারার বাবা মামলা করেছেন।
বরগুনা : নিহত রাজু সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের শাহজাহান মৃধার ছেলে। তিনি একটি তৈরি-খাবার প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গতকাল দুপুরে রাকিব (২০) নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে।
বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম বলেন, গত সোমবার রাত আটটার দিকে তিনি বুড়িশ্বর নদীর বাঁধ ধরে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় বাঁধের ওপর রক্ত দেখতে পান। এরপর বাঁধের ঢালে রক্তাক্ত একটি লাশ দেখতে পান। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজ হোসেন বলেন, আটক হওয়া যুবকটি হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় গতকাল বিকেল পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। তবে মামলার প্রস্তুতি চলছে। আটক যুবকের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডের আলামত উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।