নিউইয়র্কের সরকারি স্কুলগুলোতে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাসহ অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় ভাষায় দ্বিভাষিক শিক্ষা কর্মসূচি চালুর আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের দুই সদস্য জোসেফ ক্রাউলি ও গ্রেস মেং। এক যৌথ চিঠিতে এ আহ্বান জানিয়েছেন ডেমোক্র্যাটদলীয় প্রভাবশালী ওই দুই রাজনীতিক।
২০১০ সালের মার্কিন জনগণনা অনুসারে, নিউইয়র্কে দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত নাগরিকের সংখ্যা ৩ লাখ ৫১ হাজার। এর মধ্যে পাঁচ বছরের বেশি আগে বাংলাদেশ থেকে এসেছে, এমন মানুষের সংখ্যা ৮৪ হাজার ৬৬২। তাদের ৫৩ শতাংশই ইংরেজি ভাষায় সম্পূর্ণভাবে দক্ষ নয়। এদের অধিকাংশই বাস করে কুইন্সে।
কুইন্স থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্য জোসেফ ক্রাউলি ও গ্রেস মেং চিঠিটি পাঠিয়েছেন নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুলগুলোর চ্যান্সেলর কারমেন ফারিনার কাছে। এতে তাঁরা উল্লেখ করেছেন, মার্কিন জনগণনা বিভাগ (সেন্সাস ব্যুরো) ইতিমধ্যে নিশ্চিত করেছে যে মার্কিন ভোটাধিকার আইন অনুসারে কুইন্সের স্কুলগুলোতে দক্ষিণ এশীয় ভাষা চালুর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তা পাওয়ার যোগ্য।
এই জনগণনার ভিত্তিতেই নিউইয়র্কে ভোট গ্রহণের ব্যালটপত্রে বাংলা চালু করা হয়েছে। এ ছাড়া নিউইয়র্কের ৬০টি ভোটকেন্দ্রে বাংলা, হিন্দি ও পাঞ্জাবি ভাষার দোভাষীর উপস্থিতির ব্যবস্থাও রয়েছে। দুই কংগ্রেস সদস্যের মতে, এ সিদ্ধান্ত থেকেই প্রমাণিত হয় যে একাধিক দক্ষিণ এশীয় ভাষায় শিক্ষা কর্মসূচি চালু হওয়া কতটা জরুরি। স্কুলগুলোতে দ্বিভাষিক কর্মসূচি চালুর প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তাঁরা চিঠিতে লিখেছেন, এই শহরের স্কুলে বাংলা ও অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় ভাষার অনুপস্থিতি ‘খুবই বিস্ময়কর’।
দ্বিভাষিক কর্মসূচির মাধ্যমে একই সঙ্গে ইংরেজি ও অন্য একটি বিদেশি ভাষায় শিক্ষা দেওয়া হয়। বর্তমানে নিউইয়র্কের স্কুল-ব্যবস্থায় দ্বিভাষিক কর্মসূচি রয়েছে এমন স্কুলের সংখ্যা ১৮২টি। তার মধ্যে সর্বাধিক দ্বিভাষিক কর্মসূচি রয়েছে স্প্যানিশ ভাষার সঙ্গে (১৫৩টি স্কুলে)। তারপর রয়েছে যথাক্রমে চীনা (১১), ফরাসি (৯), ক্রেয়ল (৩), রুশ (২), কোরিয়ান (১) ও আরবি ভাষার (১) সঙ্গে। কিন্তু দক্ষিণ এশীয় কোনো ভাষার সঙ্গেই পূর্ণ দ্বিভাষিক কর্মসূচি নেই। অবশ্য বাংলা থেকে ইংরেজিতে উত্তরণের একটি মধ্যবর্তী কর্মসূচি (ট্রানজিশনাল বাইলিঙ্গুয়াল এডুকেশন) শহরটির তিনটি স্কুলে চালু রয়েছে।
এশীয় শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে চ্যান্সেলর ফারিনা দক্ষিণ এশীয় ভাষাগুলোকে নিউইয়র্ক শহরের স্কুলগুলোতে অন্তর্ভুক্তির জন্য শিগগিরই ব্যবস্থা নেবেন বলে চিঠিতে আশা প্রকাশ করেছেন দুই কংগ্রেস সদস্য। তাঁদের চিঠিকে স্বাগত জানিয়েছেন নিউইয়র্কের প্রবাসী বাংলাদেশিরা।