ভারতে গরু হত্যার গুজবের জের ধরে আহত ট্রাকচালকের মৃত্যুর খবরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে কাশ্মীরে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাশ্মীরজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, কাশ্মীরের উধমপুরের চেনানি গ্রামের রাস্তায় ৩টি গরুর মৃতদেহ দেখতে পাওয়া যায় গত ৯ অক্টোবর। এই গরুগুলোকে মৃত পড়ে থাকতে দেখে এ নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে সেখানকার গো-হত্যা বন্ধের সমর্থকরা। ওই সময় রাস্তায় একটি ট্রাক দাঁড় করানো ছিল। সেটিকে লক্ষ্য করে বিক্ষোভকারীরা পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারলে গুরুতর আহত হন ৩৫ বছর বয়সী ট্রাকচালক জাহিদ রাসুল বাট ও তার হেলপার শওকত আহমেদ দার। ৭০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় সফদরজঙ্গের হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন জাহিদ। গতকাল রবিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
যে গরু হত্যা নিয়ে সহিংসতা পরবর্তীতে ফরেনসিক রিপোর্টে দেখা যায়, বিষাক্ত কিছু খেয়ে মারা গিয়েছিল ওই গরুগুলো। কিন্তু গুজবের ওপর নির্ভর করে ফের হত্যাকা- ঘটাল চরমপন্থিরা।
এর আগে গত ২৮শে সেপ্টেম্বর গরুর মাংস খাওয়ার গুজবের জের ধরে উত্তরপ্রদেশের দাদরি এলাকায় হিন্দুত্ববাদীদের হাতে নিহত হয়েছিলেন মুহম্মদ আখলাক। দাদরি এলাকার বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছিল।
অক্টোবরের শুরুতে কাশ্মীরে একজন সংসদ সদস্য তার নিজস্ব পার্টিতে গরুর মাংস পরিবেশন করেছেন এমন অভিযোগে অধিবেশন চলাকালে তাকে মারধর করে ক্ষমতাসীন বিজেপি দলের সদস্যরা।
ভারতে সাম্প্রতিক সময়ের এ ধরনের ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার প্রতিবাদে বেশ কয়েকজন খ্যাতিমান লেখক তাদের রাষ্ট্রীয় পদক ফিরিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে রবিবার ট্রাকচালক জাহিদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই তার এলাকা অন্তনাগের বিক্ষুব্ধ লোকজন রাস্তায় নেমে পড়েন। জাহিদ ও শওকত দু’জনেই দক্ষিণ কাশ্মীরের অন্তনাগের বাসিন্দা। বিক্ষোভকারীরা জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে টায়ার পোড়াতে শুরু করে। এক পর্যায়ে সেনা-পুলিশের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ জনতার সংঘর্ষ হয়।
সহিংস পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজধানী শ্রীনগরসহ কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থানে কারফিউ মোতায়েন করেছে প্রশাসন। সূত্র : বিবিসি বাংলা