ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে টাকা আদায়?

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার শান্তিপুর পুলিশ ফাঁড়ির এক উপপরিদর্শক (এসআই) ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে সোনা মিয়া নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোনা মিয়া (৪০) উপজেলার চর ফতেহপুর গ্রামের হাতেম আলীর ছেলে। অভিযুক্ত এসআইয়ের নাম আওলাদ হোসেন। তিনি ওই ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
সোনা মিয়াসহ ওই গ্রামের কয়েকজন বলেন, প্রায় ছয় বছর ধরে সোনা মিয়া ও তাঁর স্ত্রী জুলেখা বেগম লেবাননে ছিলেন। এক মাস আগে তাঁরা চর ফতেহপুর গ্রামের বাড়িতে আসেন। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে এসআই আওলাদ হোসেনসহ পাঁচ-সাতজন পুলিশ তাঁর (সোনা মিয়া) বাড়িতে যান। এরপর ঘরের দরজা ধাক্কা দিয়ে পুলিশ সদস্যরা ডাকাডাকি করেন। দরজা খোলার পরপরই তাঁর দুই হাতে হাতকড়া লাগান আওলাদ। এরপর আওলাদ বলেন, তোর বিরুদ্ধে মামলা আছে। এরপর তিনি তাঁর কাছে এক লাখ টাকা চান। টাকা না দেওয়ায় তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন এবং ক্রসফায়ারের হুমকি দেন। একপর্যায়ে প্রাণের ভয়ে তিনি আলমারিতে রাখা ৫০ হাজার টাকা এনে আওলাদকে দেন।
এ সময় অন্য পুলিশ সদস্যরা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। টাকা নেওয়ার পর আওলাদ মোটরসাইকেলে ও অন্য পুলিশ সদস্যরা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে চলে যান। এ বিষয়টি নিয়ে গতকাল রোববার দুপুরে স্থানীয় চান্দহর ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে সালিস বৈঠক বসে। সালিসে ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সোনা মিয়া, এসআই আওলাদ, ভুক্তভোগী সোনা মিয়া ও তাঁর স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন। তবে সালিসে ভুক্তভোগী ও তাঁর স্বজনেরা টাকা নেওয়ার বিষয়টি উত্থাপন করার আগেই ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন কৌশলে তা এড়িয়ে যান।
সালিসে এসআই আওলাদ বলেন, ওই গ্রামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিদ্যুতের বকেয়া বিলসংক্রান্ত মামলা আছে। ভুলক্রমে আসামি ভেবে সোনা মিয়াকে হাতকড়া লাগানো হয়। তবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তিনিসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা চলে যান। এ ঘটনার জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
শওকত হোসেন বলেন, সোনা মিয়াকে হাতকড়া পরানো এবং এ নিয়ে তাঁর স্বজনদের সঙ্গে পুলিশের কথা-কাটাকাটির বিষয়ে সালিস করা হয়। এ ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যায় এসআই আওলাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, টাকা নেওয়ার বিষয়টি ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। ওই গ্রামে জামায়াত-শিবিরের লোকজন ও মাদক ব্যবসায়ী আছেন। তাঁদের উসকানিতে ওই ব্যক্তি (সোনা মিয়া) মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।
পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। সত্যতা পেলে পুলিশের ওই সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Featured বাংলাদেশ