স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এটি একটি চক্রান্ত। আমাদের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করেই বলেছেন, এগুলি কেন হচ্ছে, কারা কারা জড়িত। চক্রান্ত কার বিরুদ্ধে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, দেশ ও সরকার- দুই টার বিরুদ্ধেই চক্রান্ত। দেশ যখন নিম্ন মধ্যম আয় থেকে মধ্যম আয়ের দিকে যাচ্ছে, পদ্মা সেতু নিজেরা করছি, খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ, তখন এই চক্রান্ত। আজ রবিবার নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, এসব বিষয় প্রধানমন্ত্রী নিজেই অনেক আগে পরিস্কার করেছেন। তারপরও ফের বাংলাদেশে নিজেদের নাগরিকদের সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে যে সতর্কতা জারি করেছে তা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি বলেন, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক যে চক্রান্ত চলছে তা দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে। যে এলার্ট করা হচ্ছে এর সঙ্গেও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের লিংঙ্ক আছে। এসব বিষয়ে কারা কারা জড়িত তার সম্ভাব্য ধারণা তিনি (প্রধানমন্ত্রী) দিয়েছেন। আমরা এসব বিষয়ে সতর্ক আছি। আজও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধান ও গোয়েন্দা প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করছি- পূঁজা-আশুরাকে কেন্দ্র করে দুষ্কৃতিকারীরা হয়তো কিছু একটা করতে পারে। সেই বিষয়টা মাথায় নিয়ে আমরা কাজ করছি। যে কোনো বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থা আগাম তথ্য সংগ্রহে তৎপর আছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই বিদেশী হত্যার বিষয়ে আমরা অত্যন্ত সতর্কভাবে এগুচ্ছি। সঠিকভাবে তদন্ত চলছে। কারণ নতুন কোনো জজ মিয়া কাহিনী বানাতে চাই না।
মন্ত্রী বলেন, আবারও যে এলার্মিং সিচুয়েশনের কথা জানাচ্ছে এটা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টতই বলে দিয়েছেন কারা করছেন, কারা করতে পারেন। এখানে আইএস কিংবা ইসলামি (উগ্রপন্থী) সংগঠন এ ধরনের হত্যাকান্ড করে না। তিনি বলেন, আমাদের এখানে আইএসের কোনো অস্থিত্ব নেই। যখনই উগ্র ইসলামী জঙ্গিগোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চেয়েছে তাদেরকেই নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন- হরকাতুল জিহাদ, জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, আল-কায়েদা এসবই এক। এট্রাকশন ক্রিয়েট করার জন্য একেকবার একেক নাম নেয় দুষ্কৃতিকারীরা। তিনি বলেন, দেশ যখন নিম্ন মধ্যম আয় থেকে মধ্যম আয়ের দিকে যাচ্ছে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে, বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে তখন এসব চক্রান্ত হচ্ছে। আমরা এসব চক্রান্তের মূল উদঘাটনের দ্বারপ্রান্তে।
প্রসঙ্গত গত ২৮ সেপ্টেম্বর ও ৩ অক্টোবর ঢাকা ও রংপুরে দুই বিদেশি খুন হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস এর দায় স্বীকার করেছে বলে খবর এলে বাংলাদেশে কথিত জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ কযেকটি দেশ তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশে ভ্রমণের বিষয়ে সতর্কতা জারি করে।
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এরপর বিদেশি কূটনীতিকদের ডেকে সর্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানিয়ে আশ্বস্ত করা হলেও শনিবার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস তাদের নাগরিকদের নতুন করে সতর্ক করে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে বিদেশিদের নিরাপত্তা বাড়াতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো অসাধারণ পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু এখনও ‘বাস্তব ও বিশ্বাসযোগ্য’ সন্ত্রাসী হুমকি রয়েছে। বাংলাদেশে আইএসের মত কোনো জঙ্গি সংগঠনের ‘তৎপরতা নেই’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগে বলেছিলেন, বাংলাদেশকে যারা অস্থিতিশীল করতে চায়, তারাই বিদেশি হত্যায় জড়িত। ওই ঘটনা নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের দিকেও অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি।