আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে। প্রতি আউন্স বা ৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম সোনার দাম গত শুক্রবার দাঁড়ায় ১ হাজার ১৮৩ মার্কিন ডলারে। গত ২৭ মের পর সাড়ে চার মাসের মধ্যে এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম।
আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার এই মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারেও। ভরিতে ১ হাজার ৫১৭ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। সারা দেশে নতুন দর গতকাল শনিবার থেকে কার্যকর হয়েছে। ফলে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেট সোনা ৪৩ হাজার ৭৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ২১ ক্যারেট ৪১ হাজার ৬৪০ এবং ১৮ ক্যারেটের দাম কমে হচ্ছে ৩৪ হাজার ৯৯২ টাকা। সনাতন পদ্ধতির সোনার ভরি ২৩ হাজার ৯১১ টাকা। আর ২১ ক্যারেট (ক্যাডমিয়াম) রুপার ভরি দাঁড়াচ্ছে ৯৯১ টাকা। জুয়েলার্স সমিতি গত শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সোনা-রুপার দাম বৃদ্ধির বিষয়টি জানিয়েছে।
সমিতির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার পর্যন্ত প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনা ৪২ হাজার ২২৩, ২১ ক্যারেট ৪০ হাজার ১২৪ এবং ১৮ ক্যারেট ৩৩ হাজার ৪৭৫ টাকায় বিক্রি হয়। সনাতন পদ্ধতির সোনার ভরি ছিল ২২ হাজার ৫৬৯ টাকা। রুপার ভরি বিক্রি হয় ৯৩৩ টাকায়। ফলে নতুন দরে প্রতি ভরি ২২, ২১ ও ১৮ ক্যারেটে ১ হাজার ৫১৭ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির সোনার দরে ভরিতে ১ হাজার ৩৪২ টাকা বেড়েছে। আর রুপার দাম বেড়েছে ভরিতে ৫৮ টাকা।
সর্বশেষ গত ৮ সেপ্টেম্বর সোনার দর ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা পর্যন্ত কমায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি। তার আগে ২৩ আগস্ট প্রতি ভরি সোনায় সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫১৬ টাকা বৃদ্ধি করে। আর গত ৬ আগস্ট ভরিতে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২২৪ টাকা কমায়।
জানতে চাইলে জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক খান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজার পর্যালোচনা ও দেশের বাজারে সোনা সরবরাহের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে দামটি সমন্বয় করা হয়। গত এক মাসে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৭০-৮০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত বেড়েছে। তাই দেশের বাজারে দাম বাড়ানো হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ব্লুমবার্গ ও বুলিয়নভল্টের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, নীতিনির্ধারণী সুদের হার বাড়ানোর কথা থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক তা করেনি। এ ছাড়া দেশটির শ্রমবাজার শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি শূন্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে। অন্যদিকে চীনের অর্থনীতি ধীরে ধীরে চাঙা হচ্ছে। সব মিলিয়েই সোনার দর বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, ধারণা ছিল যে যুক্তরাষ্ট্র সুদের হার বাড়ালে ডলারের বিভিন্ন বিনিয়োগ স্কিমে বিনিয়োগকারীরা বেশি আগ্রহ দেখাবে। এ জন্য প্রাথমিক প্রাক্কলন ছিল বছরের শেষ তিন মাসে সোনার দাম কমে ১ হাজার ৫০ ডলারে চলে আসবে। তবে গত সেপ্টেম্বরে সুদের হার বৃদ্ধির বিষয়ে কিছু জানায়নি ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক। আর যেহেতু আপাতত এটি হচ্ছে না, তাই চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে প্রতি আউন্স সোনার দাম ১ হাজার ২০০ ডলারের কাছাকাছি চলে গেছে।