বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, দেশে বর্তমানে কয়লা ও গ্যাসের মজুদ ৩৫৬৫ মিলিয়ন টন এবং ১৪.০৮৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। আজ শনিবার মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যদি মজুদ থেকে ৫০ শতাংশ কয়লা উত্তোলন করতে পারি তাহলে এর অর্থ দাঁড়াবে প্রাকৃতিক গ্যাসের বর্তমান মজুদের সঙ্গে ৪০ ট্রিলিয়ন গ্যাস যুক্ত হওয়া।’ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) সংস্থার মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ডিআরইউ সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন বাদশা স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশকে ২০২১ সাল নাগাদ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জোরদারে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করেছে, সরবরাহ ও বিতরণ লাইন সম্প্রসারণ করেছে এবং অন্যান্য খাতের সক্ষমতার উন্নয়ন ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের ৭৫ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবধিা ভোগ করছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ট ও গতিশীল নেতৃত্বের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। সরকার বর্তমানে প্রতিমাসে গড়ে ৩ লাখ থেকে সাড়ে ৩ লাখ বিদ্যুৎ সংযোগ দি”েছ এবং দেশব্যাপী পরিবহন লাইন সম্প্রসারণ করছে।
কয়লা ভিত্তিক জ্বালানিখাত সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে ৫৩ শতাংশ কয়লা ব্যবহারের মাধ্যমে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকার একটি মাস্টারপ্লান তৈরি করেছে। তিনি বলেন, দিন দিন বিদ্যুৎখাতের দৃশ্যপট পরিবর্তন হওয়ায় বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আমরা কিছু প্রকল্প নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পে স্থানান্তরের বিবেচনা করছি। আমরা ইতোমধ্যেই বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ১৩টি এলাকা চিহ্নিত করেছি।
নসরুল হামিদ বলেন, ২০২১ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ উৎপাদন ২৪০০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করতে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ১৩০০০ মেগাওয়াট। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ২০১৮ সাল নাগাদ দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ আরইবি’র (পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড) আওতায় নিয়ে আসা। পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদন নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে স্থানান্তরের জন্য দুর্গম এবং অন্যান্য এলাকায় বাসাবাড়িতে বিপুল সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল স্থাপন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমানে সরকার ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করছে এবং ভুটান, নেপাল ও ভারতের জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে আরো বিদ্যুৎ আমদানি উদ্যোগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার জ্বালানি পরিবহন ব্যয় সাশ্রয় এবং চুরি বন্ধে চট্টগ্রাম ও ঢাকার মধ্যে পেট্রোলিয়াম জ্বালানি পরিবহনে ২৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তিনি বলেন, প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৮৯৭৮৬৬ ব্যারেল পেট্রোল, ৫,৪৩,১৫৩ ব্যারেল ডিজেল এবং ১৮৪৪৭৭ ব্যারেল কেরোসিন সরবরাহ করা হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ খাতে অনেক বিদেশী কাজ করছে, সরকার তাদের নিরাপত্তা জোরদার করেছে। তিনি বলেন, নিরাপত্তা উদ্বেগ বিদেশী বিনিয়োগ ব্যহত করবে না কারণ জাপান এ খাতে ৬ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে।