এবার মাধ্যমিক ও মাদরাসা স্তরের প্রায় সাড়ে ২২ কোটি বই নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরবরাহের কাজ শুরু হচ্ছে। নানা জটিলতা কাটিয়ে প্রাথমিক স্তরের প্রায় ১১ কোটি বইয়ের ছাপার কাজ এখন পুরোদমে এগিয়ে চলছে। সরকার আগামী বছর প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদরাসা স্তরের শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রায় সাড়ে ৩৩ কোটি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করবে। এই বিপুল সংখ্যক বই প্রস্তুত ও সরবরাহের লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এখন দিন-রাত তদারকির কাজ করে চলেছে। এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ন চন্দ্র পাল জানান, যদি প্রাথমিক স্তরের বই ছাপানোর কাজে বাংলাদেশ মূদ্রণ শিল্প সমিতির সঙ্গে জটিলতা সৃষ্টি না হতো, তাহলে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রাথমিক স্তরের বই সরবরাহের কাজও শুরু করা যেত। তিনি বলেন, তবে তারা আশা করছেন নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে অথবা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রাথমিক স্তরের বই সরবরাহের কাজ শুরু করতে পারবেন।
চেয়ারম্যান জানান, ২০১৬ শিক্ষাবর্ষে মোট ৩ কোটি ৯১ লাখ ৯৪ হাজার ৯০৩ জন শিক্ষার্থীর ২৯১টি বিষয়ের উপর ৩৩ কোটি ৪৫ লাখ ১৮ হাজার ৬৩৫টি বই বিতরণের লক্ষ্যে এনসিটিবি কাজ করে যাচ্ছে। তিনি জানান, এবার প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, এসএসসি ভোকেশনাল, ইবতেদায়ী, দাখিল ও দাখিল ভোকেশনালসহ সব স্তরের বই ছাপানোর কাজ দেশীয় মূদ্রণ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো পেয়েছে। বিগত বছরগুলোতে প্রাথমিক স্তরের বই বিদেশ থেকে ছাপিয়ে আনা হতো। বই ছাপানো, বাইন্ডিং ও উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেয়া পর্যন্ত সকল কাজ অন্যান্য বারের মত এবারও মূদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলো করবে। এনসিটিবি শুধু তদারকির দায়িত্ব পালন করছে বলে তিনি জানান।
নারায়ন চন্দ্র পাল বলেন, এবার মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) স্তরের ১ কোটি ৪ লাখ ৬০ হাজার ৮৯৩ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১১৪টি বিষয়ের ১৬ কোটি ৩০ লাখ ৪ হাজার ৩৭৩টি বই প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইবতেদায়ী স্তরের ২৭ লাখ ৩ হাজার ৯৮৪ জন শিক্ষার্থীর ৩৬টি বিষয়ের ১ কোটি ৯২ লাখ ৪৭ হাজার ৪৮০টি, দাখিল ও দাখিল ভোকেশনাল স্তরের ২৩ লাখ ৪৪ হাজার ৪৬৯ জন শিক্ষার্থীর ৮৮ বিষয়ের ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৭৮ হাজার ৮২৯টি ও এসএসসি ভোকেশনাল স্তরের ১ লাখ ৮৭ হাজার ১৫৩ জন শিক্ষার্থীর ১৮টি বিষয়ের ২২ লাখ ৭১ হাজার ৮৩৬টি বই প্রস্তুত করা হয়েছে।
সম্প্রতি প্রাথমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) স্তরের বই ছাপানো নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার কথা উল্লেখ করে এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, এখন আর কোন জটিলতা নেই। বই ছাপানোর কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। মূদ্রণ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো নির্দিষ্ট সময়ে বই সরকরাহের লক্ষ্যে এখন দিন-রাত কাজ করে চলেছে। ছাপার পাশাপাশি বাইন্ডিংয়ের কাজও এগিয়ে চলছে। তিনি বলেন, প্রাথমিক স্তরের ২ কোটি ৩১ লাখ ৭০ হাজার ৩৫১ জন শিক্ষার্থীর ৩৩টি বিষয়ের ১০ কোটি ৮৭ লাখ ৪০ হাজার ১১টি বই প্রস্তুত করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রাক-প্রাথমিকের ৩ লাখ ২৮ হাজার ৫৩ জন শিক্ষার্থীর ২টি বিষয়ের ৬৫ লাখ ৭৬ হাজার ১০৬টি বইও প্রস্তুত করা হয়েছে।