‘কৃষিকাজে নারীর অবদানের স্বীকৃতি দিতে হবে’

‘কৃষিকাজে নারীর অবদানের স্বীকৃতি দিতে হবে’

বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদনের ২০ ধরনের কাজে নারীরা জড়িত। অনেকসময় তারা ফসল 1উৎপদানে মাঠে যেমন কাজ করেন, তেমনি মাঠের বাইরে উৎপাদন কাজেও তারা প্রধান ভূমিকা রাখেন। উন্নয়ন কর্মীরা বলছেন, প্রায় ৫ থেকে ৬ কোটি নারী বিভিন্ন ধরনের কৃষি উৎপাদনের সাথে সরাসরি জড়িত। কিন্তু তাদের অর্থনৈতিক অবদানের মূল্যায়ন বা স্বীকৃতি তারা পাচ্ছেন না। এমনই প্রেক্ষাপটে আজ উদযাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস। বাংলাদেশের নারীদের একটি বড় অংশ বাস করেন গ্রামে। কৃষিকাজে তারা সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উবিনীগের প্রধান ফরিদা আখতার বলেন, কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০ ভাগ কাজ নারীদের হাতে সরাসরি করেন নারীরা। তিনি বলেন, ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে বীজ সংরক্ষণ থেকে শুরু করে মাঠে ফসল ফলানো, মাঠ থেকে ফসল আনার পরে সেটিকে প্রক্রিয়াজাত করে ঘরে তোলার ক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়ায় নারীর ভূমিকা অনেক বেশি।
বাংলাদেশে গ্রামে বহু নারী গবাদী পশুর লালন পালন করে পরিবারের আয় রোজগারে ভূমিকা রাখছেন। তিনি বলেন, আমরা কেবলমাত্র আবাদি ফসলকেই কৃষি বলি। কিন্তু কৃষিতে অনাবাদী অংশও থাকে। হাঁস-মুরগী, গরু, ছাগল সব মিলিয়ে কৃষি। আর এসব কাজে নারীদের ভূমিকাই প্রধান। কৃষিকাজে নারীর অবদানের স্বীকৃিতি দিতে হবে। কিন্তু নারীদের এই অবদানের কতটা মূল্যায়ন হচ্ছে? ফরিদা আখতার বলেন, নারীকে মোটেও মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। তাদের অবমাননা করা হয়েছে। পরিসংখ্যানে তাদের তুলে ধরা হয়নি পুরুষতান্ত্রিক সমাজে। এমনকি যারা অর্থনীতি নিয়ে কাজ করেন তারা কিন্তু মানদণ্ডটা ভুলভাবে করেন বলে নারীদের অবদানটা তারা দেখেন না।
গ্রামীণ অর্থনীতিতে ভূমিকা রেখে আসা এইসব নারীদের পরিবারে কতটা ক্ষমতায়ন ঘটছে? এ প্রসঙ্গে এই উন্নয়নকর্মী জানান তিনি তার অভিজ্ঞতায় দেখেছেন, গ্রামে কৃষক পরিবারগুলোতে নারীদের যথেষ্ট মূল্যায়ন করা হয়। পরিবারে যেসব নারী সক্রিয় তারা সেখানে সম্মান পাচ্ছে। কারণ তাদের অবদানের কারণে পরিবারগুলো লাভবান হচ্ছে। কিন্তু আধুনিক কৃষি আসার পরে যখন গরু, ছাগল হারিয়ে যাচ্ছে, তখন নারীও ক্ষমতাহীন হয়ে পড়ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, জাতীয়ভাবে কৃষি নীতি হলে নারীদের কৃষক হিসেবে মর্যাদা দিতে হবে। তাদের অবদানকে অর্থনৈতিক মানদণ্ডে ফেলে জাতীয় আয়ে তাদের অবদান তুলে ধরলে আমরা একধাপ এগোতে পারবো। সূত্র : বিবিসি বাংলা

Featured বাংলাদেশ