পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টের (এমকিউএম) প্রধান আলতাফ হোসেনকে ৮১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দেওয়ায় পাকিস্তানের একটি সন্ত্রাসবিরোধী আদালত (এটিসি) গতকাল সোমবার এ রায় দেন। খবর জিয়ো নিউজ ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
এমকিউএম নেতা আলতাফ প্রায় দুই দশক ধরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে স্বেচ্ছানির্বাসনে রয়েছেন। তিনি বিতর্কিত বিভিন্ন মন্তব্যের জন্য আলোচিত। সম্প্রতি আলতাফ এক বক্তব্যে অভিযোগ করেন, ভারতের সেনাবাহিনী কাশ্মীরি জনগণের সঙ্গে যেমন আচরণ করে থাকে, পাকিস্তানি রেঞ্জারসও (আধা সামরিক বাহিনী) করাচির বাসিন্দাদের সঙ্গে একই ধরনের আচরণ করে আসছে। বক্তব্যে পাকিস্তানি রেঞ্জারসকে নিষ্ক্রিয় করতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনী ও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনের সেনাদের করাচিতে পাঠানোর অনুরোধও করেন তিনি।
আলতাফের ওই বক্তব্য নিয়ে পাকিস্তানজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। দেশটির আইনপ্রণেতারা তাঁর ওই বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব পাস করেন।
আর বিতর্কিত ওই বক্তব্য দেওয়ায় আলতাফের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন পাকিস্তানের প্রশাসনিক অঞ্চল গিলগিত-বালতিস্তানের বাসিন্দা মির বাজ খান। স্থানীয় বিমানবন্দর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। এরপর গিলগিত-বালতিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে মামলাটির বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। আলতাফের অনুপস্থিতিতেই বিচার কার্যক্রম চলে।
আদালতের বিচারক রাজা শাহবাজ খান গতকাল রায়টি পড়ে শোনান। তিনি বলেন, রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দেওয়ায় আলতাফকে ৮১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলো। এ ছাড়া তাঁকে ২৪ লাখ রুপি জরিমানার পাশাপাশি তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বিচারক শাহবাজ খান স্বেচ্ছানির্বাসনে থাকা এমকিউএম প্রধান আলতাফকে আদালতে হাজির করার ব্যবস্থা নিতে সিন্ধু পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) নির্দেশনা দিয়েছেন।
এর আগে গত মাসে পাকিস্তানের লাহোরের হাইকোর্ট আলতাফের বিষয়ে একটি রায় দেন। এতে আলতাফের বক্তব্য, বিবৃতি, ছবি বা অন্য কোনো কর্মকাণ্ড প্রকাশ বা সম্প্রচারে পাকিস্তানের সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।