খুলনার দ্বিতীয় ইনিংস শেষ ২০৮ রানে। জয়ের জন্য ২০০ রানের লক্ষ্য পেল রংপুর। হাতে পুরো চার সেশন। খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে কাল ফুরফুরে মেজাজেই চা-বিরতিতে গিয়েছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু ঘণ্টা দুয়েক পরে সেই রংপুরই মাঠ ছাড়ল ছন্নছাড়া হয়ে। খুলনার দুই স্পিনার আবদুর রাজ্জাক ও মেহেদী হাসান মিরাজের বোলিংয়ে ছিন্নভিন্ন রংপুর ৫৮ রানেই হারিয়েছে ৬ উইকেট। রংপুর কি পারবে আজ শেষ দিনে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে বাকি ১৪২ রান তুলে নিতে?
বৃষ্টি বাগড়া না দিলে রংপুর না পারুক, খুলনা তো পারবে। কিন্তু চট্টগ্রামে চট্টগ্রাম-বরিশাল ম্যাচে নাটকীয় কিছু না ঘটলে ফল আসার সম্ভাবনা কম। এখনো বরিশালের প্রথম ইনিংসই শেষ হয়নি। ফতুল্লায় ঢাকা মহানগরের বিপক্ষে ৬ উইকেট হাতে নিয়ে ৪০ রানে এগিয়ে ঢাকা বিভাগ। বগুড়ায় দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা সিলেট এখনো রাজশাহীর প্রথম ইনিংসের চেয়ে ৩৮ রানে পিছিয়ে। তবে দলটির ১০ উইকেটই এখনো অক্ষত।
খুলনায় তৃতীয় দিনে যে ১৬টি উইকেট পড়েছে তার ১৫টিই গেছে স্পিনারদের দখলে। রাজ্জাক-মিরাজের যুগলবন্দীর আগে খুলনার ব্যাটসম্যানদের নাজেহাল করেছেন সিলেটের অফ স্পিনার সঞ্জিত সাহা। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এই ক্রিকেটার রংপুরের প্রথম বোলার হিসেবে ইনিংসে ৭ উইকেট নিয়েছেন। প্রথম ইনিংসেও ৪ উইকেট, জাতীয় লিগে ম্যাচে ১০ উইকেট নেওয়া রংপুরের প্রথম বোলারের নামও সঞ্জিত।
বিনা উইকেটে ৩০ রান নিয়ে দিন শুরু করা খুলনা দ্বিতীয় ইনিংসে প্রথম উইকেটটি হারায় দিনের তৃতীয় ওভারে, ৩৫ রানে। ইমরুল কায়েসকে এলবিডব্লু করেছেন বাঁহাতি পেসার সাজেদুল ইসলাম। তৃতীয় দিন পর্যন্ত ম্যাচে পেসারদের উইকেট এই একটিই।
দ্বিতীয় উইকেটে মেহেদী হাসান ও এনামুল হক ৪৯ রান যোগ করার পরই শুরু সঞ্জিতের উইকেট নেওয়া। খুলনা উইকেট হারিয়েছে জোড়ায় জোড়ায়। ৮৪ ও ৮৬ রানে দ্বিতীয় ও তৃতীয় উইকেট, ১২৯ ও ১৩০ রানে চতুর্থ ও পঞ্চম উইকেট, ১৫০ ও ১৫১ রানে ষষ্ঠ ও সপ্তম উইকেট হারানো স্বাগতিকেরা অষ্টম ও নবম উইকেট হারিয়েছে ১৮০ ও ১৮১ রানে।
এরপর রংপুরের ইনিংসের দ্বিতীয় ওভার থেকেই স্পিন আক্রমণ শুরু করেন খুলনার অধিনায়ক আবদুর রাজ্জাক। রাজ্জাক ও মিরাজ মিলে ইনিংসের ৩৭.৫ ওভারের ৩৫.৫ ওভার বোলিং করেছেন। ফতুল্লায় ৩৫২ রানে থেমেছে ঢাকা মহানগরের প্রথম ইনিংস। সেঞ্চুরিয়ান শামসুর থেমেছেন ১৩৮ রানে। ঢাকা বিভাগের মোশাররফ হোসেন ৫ উইকেট নিয়েছেন। এবারের জাতীয় লিগের তিন ম্যাচেই ইনিংসে ৫ উইকেট পেলেন এই বাঁহাতি স্পিনার।
বগুড়ায় প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরি পেয়েছেন রাজশাহীর অলরাউন্ডার ফরহাদ হোসেন। ২২ রানে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম। ২ রানের মধ্যে শেষ ৩ উইকেট হারানো রাজশাহী থেমেছে ৩৮০ রানে। শেষ তিনটি উইকেটসহ সিলেটের বাঁহাতি স্পিনার রাহাতুল ফেরদৌস পেয়েছেন ৫ উইকেট।
চট্টগ্রামে বরিশালের প্রথম আট ব্যাটসম্যানই কমপক্ষে ২৪ রান করেছেন। তবে ফিফটি পেয়েছেন এঁদের মাত্র দুজন। আর বরিশাল দিনটা শেষ করেছে ৯ উইকেটে ৩৪৫ রান নিয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ঢাকা বিভাগ-ঢাকা মহানগর, ফতুল্লা
ঢাকা বিভাগ: ৩২৭ ও ৩২ ওভারে ৬৫/৪ (রকিবুল ২১*; শহীদুল ২/৯)। ঢাকা মহানগর ১ম ইনিংস: ১২৪ ওভারে ৩৫২ (শামসুর ১৩৮, শরীফউল্লাহ ৫২, সৈকত ৪৮, মেহরাব জু. ৩৭; মোশাররফ ৫/১২০, মাহবুবুল ২/৭১)।
খুলনা-রংপুর, খুলনা
খুলনা: ২১১ ও ৭৪.৫ ওভারে ২০৮ (মেহেদী ৪১, মিরাজ ৩৩, এনামুল ৩১; সঞ্জিত ৭/৬৪)। রংপুর: ২২০ ও ৩৭.৫ ওভারে ৫৮/৬ (নাসির ১৭, নাঈম ১৫*; রাজ্জাক ৪/৪৪, মিরাজ ২/১৩)।
চট্টগ্রাম-বরিশাল, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ১৬১ ওভারে ৪৬৭/৭ ডি. (তামিম ১৩৭, তাসামুল ১০৭, নাফিস ৫৬, ইরফান ৪৭, সাইফউদ্দিন ৩০*; সোহাগ ৩/১৩০, আল আমিন ২/৫৬)। বরিশাল ১ম ইনিংস: ৮৬ ওভারে ৩৪৫/৯ (আল আমিন ৭২, সালমান ৫১, শাহরিয়ার ৪৪, শাহীন ৩৮, ফজলে রাব্বী ৩৪; সাইফউদ্দিন ৩/৫৯, মনিরুজ্জামান ২/৬১, ইফতেখার ২/৯৯)।
রাজশাহী-সিলেট, বগুড়া
সিলেট: ৩২৮ ও ৮ ওভারে ১৪/০ (ইমতিয়াজ ১২*, শানাজ ২*)। রাজশাহী ১ম ইনিংস: ১১৭ ওভারে ৩৮০ (ফরহাদ হোসেন ১৪৫, নাজমুল ৬২, ফরহাদ রেজা ৫৪*, সানজামুল ৩৮; রাহাতুল ৫/৮০, অলক ৩/৫৪)।