১০ বছর আগে ভয়াবহ এক ভূমিকম্পে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিলো পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীর।
কিন্তু ১০ বছর পরেও ধ্বংসস্তূপ থেকে আর ঘুরে দাঁড়ানো হয়নি সেখানকার মানুষের।
বরং সুযোগ কাজে না লাগানো আর ভঙ্গুর প্রতিশ্রুতিতে ভবিষ্যৎ হয়ে পড়েছে তাদের জন্যে গভীর অনিশ্চয়তার।
দুর্ভাগ্যের শিকার বহু মানুষকে এতোদিন পরেও অবস্থান করতে হচ্ছে আশ্রয় শিবিরে।
বিবিসির সাংবাদিক শাহজেব জিলানি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের কাছেই বালাকোটে গিয়েছিলেন ভূমিকম্পের পরপরই।
দশ বছর পর ধ্বংসস্তূপ থেকে কতটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে ওই এলাকা তা দেখার জন্যে তিনি আবারো গিয়েছেন ওই এলাকায়।
পাকিস্তান আফগানিস্তান ও ভারতের উত্তরাঞ্চলে আঘাত হানা ওই ভূমিকম্পে নিহত হয়েছিলো অন্তত ৭৫ হাজার মানুষ। আর এর বেশিরভাগেরই বসবাস ছিল পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে।
২০০৬ সালের ৮ অক্টোবর ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূ-কম্পনে বোমায় বিধ্বস্ত শহরের রূপ পেয়েছিলো বালাকোট। ৯০ভাগ ভবন পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিলো।
ঘটনার একদিন পর মি. জিলানি গিয়ে দেখতে পান মৃতদেহগুলো বের করে আনার চেষ্টা চলছে, আহতদের সেবা দেয়ার চেষ্টা করছে স্থানীয়রাই যে যেভাবে পারেন সেভাবেই।
১০ বছর পর বালাকোটে গিয়ে মি. জিলানি কথা বলেছেন ওই সময়ে বেঁচে যাওয়া কয়েকজনের সাথে। যারা বেঁচে আছেন ভয়ংকর কষ্টের স্মৃতিগুলো নিয়ে।
স্মৃতিগুলো মনে আসলে এখনো তারা অনেকেই কুঁকড়ে ওঠেন।
তাদের অনেকেই এখন ক্ষুব্ধ পাকিস্তান সরকারের ওপর।
ভূমিকম্পে তিন সন্তান হারানো মোহাম্মদ ফরিদ বলছিলেন, ‘বিশ্ব সম্প্রদায় কয়েক বিলিয়ন ডলার দিয়েছিলো। সরকার তখন নতুন করে শহর নির্মাণ করে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো। বলা হয়েছিলো আমাদের স্থানান্তর করা হবে নতুন জায়গায়। কিন্তু কিছুই হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো অবস্থান করছি আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে যেগুলো ঘটনার পর সাময়িক আশ্রয়ের জন্যে তৈরি করা হয়েছিলো। এখানে জীবনধারণের ন্যূনতম সুবিধা পর্যন্ত নেই’।
সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন প্রস্তাবিত নূতন শহরের উদ্যোগ নিয়েও করা যায়নি জমি অধিগ্রহণ নিয়ে প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যকার বিরোধের কারণে।
কিন্তু সব মিলিয়ে বালাকোটের মানুষের কাছে এই এক দশক হলো সুযোগ হারানোর আর ভঙ্গুর প্রতিশ্রুতির, যেখানে ভবিষ্যৎ কেবলই অনিশ্চিত।