চলতি অর্থবর্ষের বাজেট প্রস্তাব পেশ করার সময় ভারতের বর্তমান কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্পোরেট হাউজগুলির আয়করের হার বর্তমানে ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। পাশাপাশি কর ছাড়ের সব সুযোগ তুলে দেয়া হবে। তবে বর্তমান কর ব্যবস্থায় বিভিন্ন খরচ ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কর ছাড়ের সুবিধা দেয়া হয়েছে।
এদিকে ৫ অক্টোবর কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেটলি জানান, ব্যক্তিগত আয়করের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা লাগু করা হবে। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত আয়করের ক্ষেত্রেও করের হার যুক্তিসঙ্গত করা হবে। পাশাপাশি একটি নির্দিষ্ট সীমার ঊর্ধ্বে নগদ লেনদেনের ক্ষেত্রে প্যান কার্ডের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে দেশের অভ্যন্তরে কালো টাকার সমস্যা দূর করা সম্ভব হবে।
আগামী দিনগুলিতে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কাজের তালিকা পেশ করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী এপ্রিল থেকে সারা দেশে একক পণ্য ও পরিষেবা কর ব্যবস্থা চালু করা সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে দেউলিয়া বিধি সংক্রান্ত বিল পেশ করার বিষয়েও আশাবাদী তিনি।
জেটলি বলেন, কর্পোরেট ট্যাক্সের পরিমাণ কমানোর পাশাপাশি কর ছাড়ের সুবিধা ধাপে ধাপে তুলে দেওয়া হবে। কর ছাড়ের বিষয়গুলি নিয়ে প্রচুর আইনি সমস্যা তৈরি হয়েছে। কালো টাকার সমস্যা দূর করতে হলে প্রথমেই আমাদের একটি যুক্তিগ্রাহ্য কর ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ যাতে স্বেচ্ছায় সরকারকে কর দিতে আগ্রহী হয় এমন ব্যবস্থা চালু করতে হবে। কালো টাকার আদানপ্রদান নিয়ন্ত্রণ করতে একটি নির্দিষ্ট সীমার উপর আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে প্যান নাম্বার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার বিষয়টিও সরকার গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে।
ইঙ্গিত দিয়ে জেটলি অর্থমন্ত্রী, সাধারণ মানুষকে ব্যক্তিগত সঞ্চয়ে উৎসাহী করে তোলে এমন প্রকল্পে লগ্নির ক্ষেত্রে আয়কর ছাড় দিলেও আয়কর ছাড়ের বাকি উপকরণগুলি তুলে দেয়া হতে পারে। তবে কর সংক্রান্ত বিষয়গুলির বিশ্বাসযোগ্যতাই অন্যতম প্রধান সমস্যা। কর সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়ে সরকারের অনেক কিছু করার আছে। গোটা বিশ্বের কাছে আমাদের প্রত্যক্ষ কর ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন উঠেছে। আগ্রাসী কর ব্যবস্থা আমাদের কর আদায়ের ক্ষেত্রে কোনও সহায়তা তো করেইনি, উল্টে গোটা বিশ্বের কাছে আমরা বদনাম হয়েছি। কর সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য সব রকম পথ খোলা রাখা হবে। আইনি প্রক্রিয়া বা প্রশাসনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে তা সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।