‘চলচ্চিত্রের গান মানেই পর্দা কাঁপানো গান। এখন আর পর্দা কাঁপছে না, এখন হচ্ছে বেসরকারি টিভির আন্তঃলবিং পর্দা, তথাকথিত এফএম রেডিও আর ফেসবুক কাঁপানো গান। সিলিকন ভ্যালি থেকে উঠে আসা সিনথেটিক মিউজিক ডিরেক্টটরদের দাপটে কোণঠাসা গুণী এবং শ্রদ্ধাভাজন সংগীত পরিচালকরা। স্বাধীনতার পর থেকে চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালক শিল্পী এবং গীতিকাররা নিয়মিত পারিশ্রমিকের বাইরে মেধাস্বত্বের কিছুই পাননি। যখন পাওয়ার চেষ্টা করেছেন, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। কপিরাইট আইনের মারপ্যাঁচে উল্টো স্বত্ব হারাচ্ছেন তারা।’ কথাগুলো অভিমানের সুরে বলেছেন তারকা সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর। এর পাশাপাশি নিজের নতুন সিদ্ধান্তের কথাও ফেসবুকের মাধ্যমে সবাইকে জানালেন তিনি। এ বিষয়ে আসিফ বলেন, অতীতে রেডিও, টিভির গান থেকেই চলচ্চিত্রে বহু গান সংযুক্ত হয়েছে। এমনকি আমার অ্যালবাম ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ নামে ব্যবসাসফল ছবিও হয়েছে। সতেরো বছরের ক্যারিয়ারে আজ পর্যন্ত ফিল্মের গান বাবদ কোন রেভিনিউ পাইনি। অশ্লীল, নকল গান এবং অনুমতিবিহীন অ্যালবাম প্রকাশের প্রতিবাদে ফিল্মের গানে অনুপস্থিত ছিলাম সাত বছর, ফলাফল শূন্য, কিন্তু হতোদ্যম হওয়ার প্লেয়ার আমি না। তাই দেশবরেণ্য সংগীতজ্ঞ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ভাই, শ্রদ্ধেয় মানাম আহমেদ ভাই, শ্রদ্ধেয় শওকত আলী ইমন ভাই এবং বন্ধুপ্রতীম সংগীত পরিচালক আলী আকরাম শুভসহ আমরা সবাই একাট্টা হয়েছি। আমার যদি চলচ্চিত্রে গাইতে হয়, তাহলে সংগীতের নীল রক্তবাহী এই শ্রদ্ধাভাজনরাই কাজ করবেন। ছবির পরিচালক, প্রযোজক এসে গান পছন্দ করে নিয়ে যাবেন। অভিযোগের সুরে আসিফ আকবর আরও বলেন, অতীতে দেখেছি ছবির পরিচালকরা হিন্দি গানের ক্যাসেট ধরিয়ে দিয়েছেন, এখন ধরিয়ে দিচ্ছেন তামিল ছবির গান। সংগীত পরিচালকও অসহায়, নইলে আবার কাজ ছুটে যাবে। পৃথিবীর সব তামিল গান আমি জানিনা, গাওয়ার পরে শুনি নকল ছিল, এখন থেকে এগুলো আর চলবে না। আমরা শ্রোতাদের হাতে গান তুলে দিতেই থাকবো, হয়তো নায়ক নায়িকার ঠোঁট মেলানো বঞ্চিত হবেন দর্শক, কিন্তু গান ঠিকই পেয়ে যাবেন শ্রোতা, স্বত্ব আমাদের কাছেই থাকবে। বাজারে শিয়ালের সংখ্যা অত্যধিক বৃদ্ধি পাওয়াতে মুরগির জন্য অভয়ারণ্য তৈরি করতেই হচ্ছে।