এক বছর এক মাস পর আবারও বরিশাল সফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ২১ মার্চ বরিশালে প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি চুড়ান্ত করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর বরিশালে এটা প্রধানমস্ত্রীর দ্বিতীয় সফর।
বরিশাল জেলা প্রশাসন থেকে সরবরাহ করা প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-১ খাইরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে জানা গেছে, ২১ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে লঞ্চঘাট এলাকায় প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ক্রমে বরিশাল লঞ্চঘাটের নবনির্মিত দ্বিতল টার্মিনাল ভবনের উদ্বোধন, মেরিন অ্যাকাডেমি, বরিশাল মহানগরীতে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ও বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের লেবুখালীতে পায়রা নদীর ওপর প্রস্তাবিত পায়রা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
বেলা সাড়ে ১১টায় কীর্তনখোলা তীরবর্তী এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা পার্কের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
দুপুর ১২টায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সঙ্গে এবং দুপুর সাড়ে ১২টায় জেলার সার্বিক উন্নয়ন সম্পর্কে জেলা পর্যায়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
বিকেল পৌনে ৩টায় বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন তিনি।
সবশেষে বিকেল ৩টায় বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জনসভায় ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা।
এর আগে ২০১১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বরিশাল সফরে আসেন প্রধানমন্ত্রী। সে সময় তিনি কীর্তনখোলা নদীর ওপর নির্মিত শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবত সেতু উদ্বোধন ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
ইতোমধ্যে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর বরিশাল আগমন উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছেন আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতা কর্মীরা।
প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে যাতে কোনো প্রকার কমতি না থাকে তা নিশ্চিত করতে ১৩ মার্চ বরিশাল ক্লাব মিলনায়তনে বরিশাল বিভাগীয় ১৪ দলের প্রস্তুতিসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এর আগে ১১ মার্চ সার্কিট হাউজে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের প্রস্তুতিসভা অনুষ্ঠিত হয়। ১৫ মার্চ বরিশাল ক্লাবে যুবলীগের বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সোমবার বিকেলে অশ্বিনী কুমার হলে ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে এবং তার সফর সফল করার জন্য প্রতিদিনই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে, উপজেলায় উপজেলায় চলছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের আলোচনা ও প্রস্তুতি সভা। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে নগরীতে মিছিল হচ্ছে প্রতিদিন।
অপরদিকে, বরিশালের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১৫ দফা দাবির একটি খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. মোখলেসুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, সবার সঙ্গে আলোচনা করে দাবি দাওয়ার একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে- ভোলার গ্যাস বরিশালে আনা, বরিশালে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, বিএম স্কুল ও হালিমা খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় সরকারিকরণ, বরিশাল-ঢাকা নৌপথে ড্রেজিং, চাকরিজীবী নারীদের জন্য সরকারিভাবে মহিলা হোস্টেল নির্মাণ, জেলা আইনজীবী সমিতির বার লাইব্রেরি নির্মাণ, শ্রম আদালত নির্মাণ, সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ ও সরকারি বরিশাল কলেজে নতুন মহিলা হোস্টেল নির্মাণ, সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ ও সরকারি বরিশাল কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মাণ, বরিশালের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের স্মৃতিবিজড়িত স্থান সংরক্ষণ, সরকারি বরিশাল কলেজের নাম পরিবর্তন করে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের নামে নামকরণ, জাহাজ তৈরির জন্য ডকইয়ার্ড নির্মাণ, ঢাকা রাজউকের ন্যায় বরিশাল নগর উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, নদীবেষ্টিত হিজলা, মুলাদী ও মেহেন্দীগঞ্জের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিসহ দু’টি সেতু নির্মাণ ও উজিরপুরে সন্ধ্যা নদীর ওপর গাভারপাড় পয়েন্টে সেতু নির্মাণ।