জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মহাপরিচালক হোসে গ্রাজিয়ানো দা সিলভা বলেছেন, বাংলাদেশকে খাদ্য নিরাপত্তা ও দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। খাদ্যঘাটতি যাতে না হয় সে জন্য আগে থেকে তৎপর থাকতে হবে।
সোমবার দুপুরে প্যানপ্যাসিফিক সোনাগাঁও হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের কৃষি সেক্টর দিন দিন অগ্রসর হচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবেও বাংলাদেশ আগের তুলনায় অনেকটা স্বাবলম্বী। অর্থনীতির সূচকেও বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা দেখা যাচ্ছে।
খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা সম্পর্কে বলেন, বাংলাদেশে খাদ্য মজুদ রয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে খাদ্যঘাটতি না হয় সে জন্য সরকার তৎপর রয়েছে বলেও জানান তিনি।
উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এফএও মহাপরিচালক বাংলাদেশকে তৃতীয় বিশ্বের মধ্যে সম্ভাবনাময় দেশ উল্লেখ করে বলেন, ‘আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন আরো বাড়বে। আর সেজন্য কৃষকদের প্রশিক্ষিত করে তুলতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বর্তমানে এফএও বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা বিনিয়োগ পরিকল্পনা; অতিদরিদ্র, প্রান্তিক ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য নিরাপত্তা; জরুরি পরিস্থিতিতে খাদ্য বলয়ের ঝুঁকি নিরসন ও কৃষি বিপণন এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনাসহ বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতে সহায়তা করছে। গত তিন বছরে এফএও বাংলাদেশে ৩৯ দশমিক ১৮ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা দিয়েছে।
মহাপরিচালক নির্বাচিত হওয়ার আগে হোসে গ্রাজিয়ানো দা সিলভা ব্রাজিলের বিশেষ মন্ত্রী হিসেবে খাদ্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ে তিনি ব্রাজিলে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে ‘জিরো হাঙ্গার কর্মসূচি’ গ্রহণ করেন, যা একটি সফল কর্মসূচি হিসেবে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়। এ কর্মসূচির পরিকল্পনা প্রণয়নেও তিনি মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।
জিরো হাঙ্গার কর্মসূচির মাধ্যমে পাঁচ বছরে ব্রাজিলের ২ কোটি ৪০ লাখ অতিদরিদ্র লোকের অবস্থার উন্নয়ন ঘটে। ফলে ব্রাজিলে অপুষ্টির হার ২৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
হোসে গ্রাজিয়ানো দা সিলভা ২০০৬ সাল থেকে এফএও’র সহকারী মহাপরিচালক এবং ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে এফএও’র আঞ্চলিক প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
হোসে গ্রাজিয়ানো দা সিলভা এফএও’র অষ্টম মহাপরিচালক। গত বছরের জুনে নির্বাচিত হয়ে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি তিনি এফএও’র মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেন। ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত এ দায়িত্বে থাকবেন।