নেপালের নতুন সংবিধানকে ঘিরে ভারতের সাথে দেশটির বিরোধের মধ্যেই নেপালে ক্যাবল টেলিভিশন অপারেটররা প্রায় সবকটি ভারতীয় টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে।
নেপাল বলছে যে, ভারত তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলাচ্ছে। ক্যাবল অপারেটররা সমিতি বলছে, ভারতের সাথে তাদের সীমান্তে জ্বালানীসহ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বোঝাই ট্রাক আটকে রাখার প্রতিবাদে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দিল্লি অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করছে। নেপাল কেবল টিভি অপারেটর্স এসোসিয়েশনের প্রধান সুধীর পরাজুলি কাঠমান্ডুতে বিবিসির নেপালি সার্ভিসকে জানিয়েছেন, যে ৪২টি ভারতীয় স্যাটেলাইট চ্যানেলের সম্প্রচার তারা বন্ধ করে দিয়েছেন।
নেপালের বিভিন্ন শহরে আর গ্রামে ভারতীয় চ্যানেলগুলি খুবই জনপ্রিয়, কিন্তু নেপালের বহু মানুষ মনে করেন যে ভারত জোর করে নেপালে পণ্য পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে গত কয়েকদিন ধরে – যার ফলে নেপালে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের একটা সঙ্কট দেখা দিয়েছে- বিশেষত পেট্রো পণ্যের।
যেহেতু নেপালের নতুন সংবিধান নিয়ে ভারত সন্তুষ্ট নয়, সেজন্যই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ভারত পণ্য চলাচল বন্ধ করেছে এমনটাই মনে করেন নেপালের বহু মানুষ। সেজন্যই পাল্টা প্রতিবাদ হিসাবে ভারতীয় চ্যানেলগুলো ব্ল্যাকআউট করে দেওয়া হয়েছে।
এই নিয়ে কাঠমান্ডুতে প্রতিবাদ মিছিলও হচ্ছে । আবার কেবল টিভি-র সঙ্গেই কয়েকটি সিনেমা হলে ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
নেপালের নতুন সংবিধানে ভারত লাগোয়া অঞ্চলগুলির বাসিন্দা মূলত মধেশি আর থারু জনজাতিদের সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব দেওয়া হয়নি যারা নেপালের জনসংখ্যার প্রায় ৪০% তাদের এলাকাগুলোতে দাবির থেকে অনেক কম রাজ্য দেওয়া হয়েছে এমনটাই মনে করে ভারত।
দিল্লি আরও বেশি চিন্তিত এই কারণে, যে ভারত লাগোয়া তরাই অঞ্চলে যদি অস্থিরতা না কমে, তার প্রভাব সীমান্ত পেরিয়ে ভারতেও পড়বে বিশেষত বিহার আর উত্তরপ্রদেশে।
নেপালের অনেক মানুষও টুইটারে মন্তব্য করছেন যে তরাই অঞ্চলের মধেশি আর থারুদের এই দাবীটা যথার্থ, কিন্তু ভারত সেটা নিয়ে কেন মতামত দেবে, দিল্লি কেন নাক গলাবে সেটা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। সূত্র : বিবিসি বাংলা