জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে মাঠপর্যায়ের পাশাপাশি নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে অংশগ্রহণ বাড়াতে বাংলাদেশ একটি জাতীয় শান্তিরক্ষা কৌশল প্রণয়ন করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার জাতিসংঘ সদর দফতরে শান্তিরক্ষা বিষয়ক সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, “জাতীয় শান্তিরক্ষা কৌশলপত্র প্রণয়ন এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সবচেয়ে বেশি সেনা ও পুলিশ সদস্য পাঠানো বাংলাদেশ এখন আরওরো জরোলো ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত।”
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে শেখ হাসিনা কো-চেয়ার ছিলেন বলে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণে বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার ধারাবাহিকতায় মালি, ডিআর কঙ্গো এবং মধ্য আফ্রিকায় দ্রুততার সঙ্গে সেনা মেতায়েন করা হয়েছে।”
গত বছররের সম্মেলনে ঢাকার পক্ষ থেকে তুলে ধরা কিছু প্রতিশ্রুতির প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, “বর্তমান শান্তিরক্ষা মিশনগুলোর পাশাপাশি ভবিষ্যতে বাংলাদেশ তার সেনাবাহিনীর পদাতিক ব্যাটালিয়ন, পুলিশ ইউনিট, সরবরাহ হেলিকপ্টার, প্রকৌশল সামুদ্রিক ইউনিটসহ সম্ভাব্য সব সম্পদ ব্যবহারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” বাংলাদেশ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের আধুনিকায়নের ওপর জোর দিচ্ছে বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশে স্থাপিত ইনস্টিটিউট ফর পিস সাপোর্ট অপারেশন্স অ্যান্ড ট্রেনিংকে (বিপসট) শান্তিরক্ষীদের, বিশেষ নারী শান্তিরক্ষীদের প্রশিক্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তোলা হবে।”
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের সেনা ও পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তার প্রতিশ্রুতি এবং বেসামরিক জনগণের সুরক্ষা এবং লিঙ্গ ও মানবাধিকারের বিষয়গুলো রক্ষায় বাংলাদেশের অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরেন।
শান্তিরক্ষীদের যৌন হয়রানির ঘটনায় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করতে সদস্যদেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, শান্তিরক্ষীদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত সদস্যদেশগুলোর প্রতি একসঙ্গে কাজ করতে মহাসচিবের আহ্বানের প্রতি একাত্মতা জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন, শান্তিরক্ষায় অংশ নেয়া বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা এ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। এ ছাড়া ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, রুয়ান্ডা ও উরুগুয়ের প্রতিনিধিরাও আলোচনায় অংশ নেন।