রাজস্ব ও মুদ্রানীতির সমন্বয়ের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কে নামিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
রোববার সকালে নগরীর একটি হোটেলে ব্যাংকিং তদারকির (সুপারভিশন) ওপর আয়োজিত এক সভায় তিনি এ আশা প্রকাশ করেন। ‘প্রোমোটিং ব্যাংকিং এক্সেলেন্স অ্যান্ড ইন্টেগ্রিটি অ্যাট দি ব্রাঞ্চ লেভেল’ শীর্ষক আঞ্চলিক পর্যায়ের সভায় ড. আতিউর রহমান প্রধান অতিথি ছিলেন।
মুদ্রানীতির কৌশলী বাস্তবায়নের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, মুদ্রানীতিতে কিছু রক্ষণশীল পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন হলে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। বর্তমানে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা স্থিতিশীল রয়েছে বলে দাবি করেন ড. আতিউর রহমান।
চলতি বছর যেকোনো মূল্যে ব্যাংকের স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে নজরদারি করার জন্য কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বর্তমান বিশ্ব ব্যাংকিং পরিস্থিতি নিয়ে গভর্নর বলেন, বিশ্বজুড়েই ব্যাংকিং বদলে যাচ্ছে। সে কারণে ব্যাংক ব্যবস্থার বিধায়ক ও তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকায় আমাদেরও বদলাতে হবে।
সনাতনী ধারণা ও পদ্ধতিগত প্রক্রিয়াগুলো নতুন প্রেক্ষাপটে যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশের মতো আমাদের ব্যাংকগুলোর কর্মকাণ্ডে বহুবিধ ঝুঁকি ও দুর্বলতা রয়েছে বা নতুনভাবে উদ্ভব হচ্ছে।`
‘নিবিড় শ্রম ও মনোনিবেশে এই ঝুঁকি ও দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজন মতো প্রতিরোধমূলক সর্বোত্তম পন্থা অবলম্বন করতে হবে।’
২০১২ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুপারভিশন কার্যক্রমের বিভিন্ন দিকে উৎকর্ষ আনার জন্য কাজ করা হচ্ছে জানান তিনি।
রুটিন অনুযায়ী বিচ্যুতিগুলোর দিকে বেশি মনোনিবেশ না করে বর্তমান ব্যবস্থায় পরিদর্শন করে প্রতিবেদন তৈরি ও অনুমোদনের পর ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বরাবর তা পাঠাতে অনেক সময় লেগে যায়। ফলে পর্যবেক্ষণ ও বিভিন্ন সুপারিশ শাখায় পৌঁছবার পর অনেক ক্ষেত্রেই হালনাগাদ তথ্যভিত্তিক থাকে না।
এ অবস্থার পরিবর্তন এনে প্রতিবেদন দ্রুত প্রণয়ন ও প্রেরণ নিশ্চিত করা হবে।
আঞ্চলিক পর্যায়ে চট্টগ্রামেই এ ধরনের টাউনহল সভা প্রথম অনুষ্ঠিত হলো। পর্যায়ক্রমে দেশের অন্যান্য এলাকায়ও এ সভা হবে বলে অনুষ্ঠানে ড. আতিউর রহমান জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম ও সিলেট অফিসের সুপারভিশন সংক্রান্ত উপ-মহাব্যবস্থাপক, যুগ্ম-পরিচালক, উপ-পরিচালক ও সহকারী পরিচালকরা এ সভায় অংশ নেন।
দিনব্যাপী এ টাউন হল সভার প্রথম পর্ব বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের উদ্বোধনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সভার দ্বিতীয় পর্বে ব্যাংকিং সুপারভিশন কার্যক্রমের ওপর একটি কি নোট উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং সুপারভিশন অ্যাডভাইজর গ্লিন টাসকি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক নওশাদ আলী চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সুপারভিশন কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মো. রাজী হাসান ও আল্লাহ মালিক কাজমী।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যর মধ্যে নির্বাহী পরিচালক মো. এবতাদুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, এসএম মনিজ্জামান, চট্টগ্রাম অফিসের মহাব্যবস্থাপক মাছুম কামাল ভূঁইয়া, প্রধান কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক দেব প্রসাদ দেবনাথ, রবিউল হাসান ও এএসএম আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।