টিভির মাধ্যমেও নজরদারি করবে সিআইএ!

টিভির মাধ্যমেও নজরদারি করবে সিআইএ!

ফ্ল্যাটস্ক্রিন টেলিভিশনে ইন্টারনেটের মাধ্যমে Netflix থেকে কেউ সিনেমা ডাউনলোড করলে বা ইন্টারনেট রেডিও চালালে এখন থেকে যেন সজাগ থাকেন। ঘরের মধ্যেও যে তার ওপর নজরদারি করা হচ্ছে না এটা নিশ্চিত করে বলা যাবে না।

কারণ সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র পরিচালক ডেভিড পেট্রাউস বলেছেন, গুপ্তচর বৃত্তির ধরন খুব শিগগির বদলে যাবে। গুপ্তচররা আপনার ঘরের মধ্যেও ক্ষুদ্র যন্ত্র বসিয়ে দিতে পারবে- অ্যাপ্লিকেশন নির্ভর বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ব্যবহার ব্যাপক হারে বাড়ছে- তার মানে হল মানুষ নিজেই তার বাড়িতে ওই ধরনের আড়িপাতার যন্ত্র বয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

একটি কোম্পানির সঙ্গে নতুন প্রযুক্তি নিয়ে কথা বলার সময় এসব কথা বলেন পেট্রাউস। এই কোম্পানি ঘরে ব্যবহৃত ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি যেমন ফ্রিজ, ওভেন এবং আলোকসজ্জার সঙ্গে প্রসেসর এবং ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করার চিন্তাভাবনা করছে।

সিআইএ দাবি করছে, এরকম যন্ত্রপাতি তারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে পড়তে পারবে। এমনকি নির্দিষ্ট বাড়ির বাইরে থেকে রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমেও তারা পড়তে সক্ষম হবে।

উল্লেখ্য, দূর থেকে নিয়ন্ত্রণযোগ্য সব যন্ত্রপাতি এখন অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। চিপ তৈরির প্রতিষ্ঠান এআরএম সম্প্রতি জানিয়েছে, কর্মশক্তিতে চলে এবং সস্তা কিছু চিপ তারা তৈরি করেছে যেগুলো ঘরে ব্যবহৃত ফ্রিজ, ওভেন থেকে দরজার ঘণ্টিতে পর্যন্ত যুক্ত করে দেওয়া সম্ভব।

সিআইএ পরিচালক পেট্রাউস বলেছেন, সাধারণ মানুষের ব্যবহৃত ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি যেগুলো বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনে চলে এবং ইন্টারনেটে যুক্ত থাকে সেগুলো একেবারে খোলা বইয়ের মত পড়া সম্ভব। এমনকি যন্ত্রটি যদি দূর নিয়ন্ত্রিত হয় তবুও।

সিআইএ পরিচালক বলেন, ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত যন্ত্রপাতি গুপ্তচর বৃত্তির শিল্পটাই পাল্টে দেবে। অদূর ভবিষ্যতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ওপর নজরদারি করার জন্য গোপন কোনো যন্ত্র বসানোর প্রয়োজন হবে না। ব্যবহারকারীর ইন্টারনেটে যুক্ত যন্ত্রের মাধ্যমেই তার ওপর নজরদারি করা যাবে।

এরকম উচ্চাভিলাষ নিয়ে অবশ্য এখন অনেকেই আশাবাদী। তারা মনে করছেন, ক্ষুদ্র যন্ত্রাদি ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারবে নির্দিষ্ট ব্যক্তির সঠিক অবস্থান এবং তার কর্মকাণ্ডের সার্বক্ষণিক হালনাগাদ। আর এগুলো চিহ্নিত করা যাবে কম্পিউটারের মাধ্যমে যেরকম এখন গুগল ম্যাপের সাহায্যে অনেকটা করা সম্ভব হচ্ছে।

তবে মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনগুলো এ ধরনের পরিকল্পনার সমালোচনা করছে। ইলেক্ট্রনিক ফ্রন্ট্রিয়ার ফাউন্ডেশন সতর্ক করে বলেছে, গোপনে সংগৃহীত এমন তথ্য-উপাত্তের অপব্যবহার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কিন্তু সমস্যা হল- বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র যেগুলো অ্যাপ্লিকেশনে চলে তার ব্যবহার যত বাড়বে এবং যত বেশি নতুন নতুন যন্ত্রের উদ্ভাবন ঘটবে নজরদারির সুযোগ তত বাড়বে।

আন্তর্জাতিক