আরব বসন্তের আদলে পাকিস্তানিদেরও সরকার ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার আহ্বান জানিয়েছেন আল কায়েদার শীর্ষ নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরি।
শুক্রবার ইন্টারনেটে পোস্ট করা একটি ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে তিনি এই আহ্বান জানিয়েছেন বলে খবর দিয়েছে এনডিটিভি।
জিহাদিস্ট ফোরাম নামের ওই ওয়েবসাইটে দেওয়া ১০ মিনিটের ভিডিওচিত্রে জাওয়াহিরি বলেন, পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র মার্কিন স্বার্থকেই সম্মান করে।
সবুজ একটি পর্দার সামনে দাঁড়িয়ে জাওয়াহিরি গত বছর আরব বিশ্বে ঘটে যাওয়া বিদ্রোহের উদাহরণ অনুসরণ করে আন্দোলনের আহ্বান জানান পাকিস্তানিদের প্রতি।
গত বছরের নভেম্বরে মার্কিন বিমান হামলায় অন্তত ২৬ পাকিস্তানি সেনা নিহতের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই ঘটনার পরও পাকিস্তানি বাহিনী আমেরিকার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়নি। এই সেনাবাহিনীর কাছে জনগণের প্রত্যাশা করার কিছু নেই।
“ও আমার পাকিস্তানি ভাইয়েরা, ও আমার পাকিস্তানি জনগণ, এই বিশ্বাসঘাতক সেনাবাহিনী আর অর্থলোলুপ ঘুষখোর সরকার আপনাদের সম্পদ লুটপাট করেছে,” বলেন জাওয়াহিরি।
“তারা আপনাদের অর্থনীতির চরম সর্বনাশ করেছে। ধ্বংস করেছে আপনার জগৎ, আপনার হৃদয়। এরপরও কিসের জন্য আপনারা অপেক্ষা করছেন”, প্রশ্ন রাখেন আল কায়েদা প্রধান।
তিনি বলেন, “তিউনিসিয়া, মিশর, লিবিয়া, ইয়েমেন এবং সিরিয়ার ভাইদের কাছ থেকে শিখে আপনারাও নেতৃত্ব গ্রহণ করুন, যারা নিপীড়নের বিরুদ্ধে নিজেদের উৎসর্গ করতে সাহসের সাথে বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়েছে।”
গত অগাস্টে অপহৃত এক মার্কিন এনজিও কর্মীর মুক্তির বিষয়েও কথা বলেন তিনি। আল কায়েদার দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ওয়ারেন ওয়েনস্টেইন নামে বর্ষীয়ান সেই মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দেওয়া হবে না বলেও জাওয়াহিরি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “আফিয়া সিদ্দিকি, শেখ ওমর আবদুল রহমান, ওসামা বিন লাদেনের পরিবার এবং আল কায়েদা ও তালেবানের সাথে সম্পৃক্ত সন্দেহে আটকদের মুক্তিসহ অন্যান্য দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি (ওয়েনস্টেইন) তার পরিবারের সাথে মিলিত হতে পারবেন না।”
গত বছর পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে আল কায়েদার শীর্ষ নেতা ওসামা বিন লাদেন মার্কিন কমান্ডো হামলায় নিহত হওয়ার পর সেই দায়িত্ব নেন মিশরীয় বংশোদ্ভূত জাওয়াহিরি। এর আগে দীর্ঘদিন তিনি আল কায়েদার দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
‘আরব বসন্ত’ নামে পরিচিতি পাওয়া গণআন্দোলনকে বিভ্রান্ত করতে এবং এর কৃতিত্ব নিজের ঝোলায় নিতে এ ধরনের বেশ কয়েকটি ভিডিওবার্তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছাড়া হয়েছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।