যুক্তরাষ্ট্রে সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকালে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের ওয়ালডর্ফ অ্যাস্টোরিয়া হোটেলে ২ প্রতিবেশী দেশের সরকার প্রধানের মধ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র সূত্রে জানা যায়, অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে উভয় প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে সম্প্রতি সম্পাদিত স্থল যোগাযোগ চুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। মোদি এই চুক্তিকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য একটি মডেল হিসেবে অভিহিত করেন। এই চুক্তি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ পক্ষ, বিশেষত সে দেশের সরকারি কর্মকর্তারা, যে তৎপরতা দেখিয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী তার প্রশংসা করেন। নরেন্দ্র মোদি সার্কভুক্ত দেশ সমূহের নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরও বেশি অনানুষ্ঠানিক মতবিনিময়ের ওপর জোর দেন বলে মুখপাত্রটি জানান। মোদি বলেন, ‘কূটনৈতিক প্রটোকল বাদ দিয়ে আমাদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো উচিত।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কথা সমর্থন করে দক্ষিণ এশীয় দেশ সমূহের নিকটতর সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশ স্থল চুক্তির ফলে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল-বা তথাকথিত ‘বিবিআইএন’ দেশ সমূহ-সবাই উপকৃত হবে। হাসিনা বলেন, কোনো ক্ষেত্রে মতানৈক্য দেখা দিলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তা অনায়াসেই সমাধান সম্ভব। তিনি জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এমডিজি অর্জনে বাংলাদেশের সাফল্য ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। আলোচনার সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী এবং প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টা, মশিউর রহমান ও গওহর রিজভী। ভারতীয় পক্ষে মোদিকে সহায়তা করেন সে দেশের পররাষ্ট্রসচিব ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে ৮ দিনের সরকারি সফরে গেছেন। আগামি ২৭ সেপ্টেম্বর এসডিজি-বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনের কর্ম-অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতা করবেন। বাংলাদেশের অগ্রাধিকারগুলো তিনি তুলে ধরবেন। পরবর্তীতে ২৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উদ্যোগে আয়োজিত হাই লেভেল সামিট অন পিস অপারেশনে যৌথ সভাপতিত্ব করবেন তিনি। ২৯ সেপ্টেম্বর ওবামার উদ্যোগে আয়োজিত লিডার্স সামিট অন কাউন্টারিং আইএসআইএল অ্যান্ড ভায়োলেন্ট এক্সট্রিমিজমে যোগ দেবেন। এছাড়াও জাতিসংঘের বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি চীনের প্রধানমন্ত্রী শি জিনপিং, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট, নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা ও জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হবে।